আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
একসময় মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুও ছিল না তাঁদের। অথচ এখন তাঁরা সফল তারকা এবং সেই সুবাদে অঢেল সম্পদের মালিক। জেনে নিন শূন্য থেকে মিলিয়নেয়ার হয়ে যাওয়া কয়েকজন সুপারস্টারের কথা।
এক সময় পার্কের বেঞ্চেও শুয়েছেন ড্যানিয়েল ক্রেইগ
জেমস বন্ড তারকা ড্যানিয়েল ক্রেইগ এখন কমপক্ষে ৬০ মিলিয়ন ডলারের মালিক। বাড়ি-গাড়ির অভাবের তো প্রশ্নই ওঠে না। অথচ একসময় তাঁকেও রাত কাটাতে হয়েছে লন্ডনের হাইড পার্কের বেঞ্চে। তাঁর স্মৃতিচারণাতেও নানা সময় উঠে এসেছে সে কথা। এখন সুসময়। জেমস বন্ড সিরিজের ‘স্কাইফল’-এ অভিনয় করেই ১৭ মিলিয়ন ডলার আয় করেছেন ড্যানিয়েল ক্রেইগ।
গৃহহীন থেকে আজকের সুপারস্টার হেলি বেরি
২১ বছর বয়সে নিউ ইয়র্কে জীবনযুদ্ধ শুরুর সময়টায় শহরের গৃহহীনদের আশ্রয় শিবিরেই থাকতে হয়েছিল তাঁকে। মারিয়া হেলি বেরিও এখন হলিউড সুপারস্টার। ক্যালিফোর্নিয়ায় প্রাসাদোপম অট্টালিকায় তাঁর বাস। ১৯৯১ সালে ‘স্পাইক লি’ ছবির মাধ্যমে তারকারাজ্যে প্রবেশের পর থেকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি। জেমস বন্ড সিরিজে অভিনয় করেছেন। অস্কার জিতেছেন। এক সময়ের গৃহহীন হেলি বেরির আয় ইতিমধ্যে ৭০ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।
এক সময় বাসের সিটে রাত কাটিয়েছেন স্ট্যালোন
সিলভেস্টার স্ট্যালোনও একসময় বাসের সিটে রাত কাটিয়েছেন। নিউ ইয়র্কে তখন তাঁরও থাকার জায়গা নেই। বাসের সিটে শুয়ে শুয়েই পত্রিকার বিজ্ঞাপন পড়লেন। সেই বিজ্ঞাপনে একটি পর্নো ছবিতে অভিনয়ে আগ্রহীদের যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। একদিন কাজ করলে ১০০ ডলার পাওয়া যাবে। স্ট্যালোন পরের দিনই চলে যান অভিনয় করতে। বাকিটা ইতিহাস। ‘ব়্যাম্বো’ ছবির স্ট্যালোন এখন ৩৪০ মিলিয়ন ডলারের সমমূল্যের সম্পত্তির মালিক!
মায়ের সঙ্গে রাগ করে ঘর ছাড়া জেনিফার লোপেজ
অভিনেত্রী, গায়িকা জেনিফার লোপেজের গল্পটা একটু অন্যরকম। লেখাপড়া আর ভবিষ্যৎ নিয়ে মায়ের সঙ্গে তুমুল ঝগড়া হওয়ায় রেগেমেগে ঘর ছাড়েন জেনিফার। কিন্তু চলবেন কী করে? ড্যান্স স্টুডিয়োতে কাজ করার সুযোগ এলো। লুফে নিলেন সেই সুযোগ। হলিউডের এই সেক্সি তারকার আয় এখন ১১০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
শৈশবেই সংসারের হাল ধরেছিলেন জিম ক্যারি
বাবার চাকরি যাওয়ায় জিম ক্যারিকে সংসারের হাল ধরার কথা ভাবতে হয়েছিল মাত্র ১২ বছর বয়সে। তাঁকেও তখন বাসের সিটে রাত কাটাতে হয়েছে। হলিউডের সাড়া জাগানো এই কৌতুক অভিনেতার সহায়-সম্পত্তির মোট আনুমানিক মূল্য এ মুহূর্তে ১৫০ মিলিয়ন ডলার।
মায়ের একটি টেলিফোন এবং হিলারি সোয়াঙ্ক
অভিনেত্রী হিলারি সোয়াঙ্ক লস এঞ্জেলেসে চলে যান ১৫ বছর বয়সে। অবশ্য সঙ্গে মা ছিলেন। মা-মেয়ের কাছে ছিল মাত্র ৭৫ ডলার। বাস নয়, থাকার জায়গা ছিল না বলে তখন নিজেদের গাড়িতেই রাত কাটিয়েছেন হিলারি সোয়াঙ্ক আর তাঁর মা। রাস্তার পাশের এক টেলিফোন বুথ থেকেই মা একদিন এক পরিচালককে ফোন করে মেয়েকে একটা সুযোগ দেয়ার অনুরোধ করলেন। তাঁর সেই মেয়ে এখন অস্কারজয়ী অভিনেত্রী এবং কমপক্ষে ৪০ মিলিয়ন ডলারের সম্পদের মালিক।
উইলিয়াম শ্যাটনারের তখন দুঃসময়
‘স্টারট্রেক’ ছবিতে ক্যাপ্টেন কার্ক চরিত্রে অভিনয় করে প্রায় অমরত্ব পেয়ে যাওয়া উইলিয়াম শ্যাটনারকেও একটা সময় পিকআপ ভ্যানে রাত কাটাতে হয়েছে। ১৯৬৯ সালে স্টারট্রেকের শুটিং বন্ধ করা হয়। স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়িও হয় তখন। দুঃসময় বেশি দিন থাকেনি। কারণ কিছুদিন পর আবারো স্টারট্রেকের শুটিং শুরু হয়। শুটিং শেষে প্রচার শুরুর পরই রাতারাতি তারকা হয়ে যান শ্যাটনার। এখন তাঁর মোট আয়ের পরিমাণ ১০০ মিলিয়ন ডলারের মতো।
শানিয়া টোয়াইনকেও আশ্রয় শিবিরে থাকতে হয়েছে
সংগীত শিল্পী শানিয়া টোয়াইনও জীবিকা নির্বাহের চেষ্টা শুরুর সময় কিছু দিন গৃহহীনদের আশ্রয় শিবিরে থেকেছেন, কখনো আবার বাসের সিটে শুয়েও তাঁকে কাটাতে হয়েছে রাত। ক্যারিয়ারে তাঁর মোট আয় এখন ২৪৫ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
তখন জঁ ক্লদ ভ্যান ডামও গৃহহীন
‘ব্লাডস্পোর্ট’, ‘ইউনিভারসাল সোলজার’ এবং ‘সাডেন ডেথ’-এর মতো অ্যাকশন ছবির জনপ্রিয় নায়ক ভ্যান ডামও জীবিকার সন্ধানে যুক্তরাষ্ট্রের লস এঞ্জেলেস শহরে গিয়ে প্রথমদিকে রাস্তায় ঘুমাতে বাধ্য হয়েছেন। সে সময় খাবারও জুটত না তাঁর প্রতিদিন। ‘মি. বেলজিয়াম’ খেতাব জেতা সাবেক এই বডি বিল্ডার এখন ৩০ মিলিয়ন ডলার সমমূল্যের সম্পদের মালিক।
গৃহহীন মেয়েটিকে ধর্ষণের শিকারও হতে হয়
যুক্তরাষ্ট্রের মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ওপ্রা উইনফ্রের শৈশবের প্রায় পুরোটা সময়ই কেটেছে অর্ধাহারে-অনাহারে। পরিত্যক্ত শিশুদের আশ্রয় শিবিরে থেকেছেন কিছুদিন। তখন ধর্ষিতাও হয়েছেন ‘ওপ্রা উইনফ্রে শো’ উপস্থাপনার কারণে সারা বিশ্বে পরিচিতি পাওয়া এই কৃষ্ণকলি। সেই অপরাহ উইনফ্রে এখন ৩ বিলিয়ন ডলারের সমমূল্যের সম্পদের মালিক।
সূত্র : গৃহহীন থেকে তাঁরা এখন সম্পদশালী তারকা [ডয়চে ভেলে, ৫ এপ্রিল ২০১৬]