করিমগঞ্জে ঘুমন্ত কয়েকটি পরিবারের ওপর সন্ত্রাসী হামলা

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি ।।

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার গুনধর ইউনিয়নের মরিচখালি গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে বুধবার ২৮ জুন ভোর রাতে কয়েকটি পরিবারের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ হামলায় ওই পরিবারগুলোর বেশ কয়েকজন নারীসহ অন্তত ১৬জন আহত হয়েছে। হামলার সময় আক্রান্তদের বাড়ি-ঘরে ব্যাপক লুটপাটও চালানো হয় বলে এলাকাবাসী জানান।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মরিচখালী বাজারের পাশে ২৬ শতাংশ জমি নিয়ে উরদিঘী গ্রামের মো. সেলিম মিয়া ও মরিচখালির মো: তাওহীদুল ইসলাম খোকনের মধ্যে পূর্ববিরোধ ছিল। এ নিয়ে এলাকায় কয়েকবার দরবার সালিশ হয়েছে। এর জের ধরে বুধবার ভোর সাড়ে ৩টার দিকে মো. সেলিম ও সেলিমের চাচা-শ্বশুর জামাল মিয়ার লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাওহীদুল ইসলামের ঘুমন্ত পরিবার ও তার আত্মীয়-স্বজনদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। এতে তাওহীদুল ইসলাম খোকন (৩৫), তার মা সফুরা আক্তার (৭০), বোন জুয়েনা আক্তার (৩৮), সামসুন্নাহার (৪০), ভাই মতিউর রহমান (৬০), ভাবী সুফিয়া আক্তার (৫০), ভাতিজা মো. বুরহান উদ্দিন (২২), আবু সাঈদ (৩৫), ভাগ্নে মো. হাবিবুর রহমান (৪০), হাবিবের স্ত্রী পুষ্প আক্তার (৩৫), চাচাত ভাই মো. হবি মিয়া (৫০), মো. আক্কাস মিয়া (৩০), মো. আবু সালেক (৬০), নজরুল ইসলাম (৫০) আহত হন। আহতদের অধিকাংশের অবস্থাই গুরুতর। তাদের কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাওহীদের ভাতিজা আহত আল আমিন (৩০) ও রামিম মিয়াকে (২৫) প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত তাওহীদুল ইসলাম খোকন এই প্রতিনিধিকে বলেন, জমি সংক্রান্ত পূর্ববিরোধের জেরে সেলিম ও জামালের পক্ষের ২০-২৫ জন ভোরে ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা তার পরিবার ও স্বজনদের ওপর রামদা, বল্লম, ছুরা নিয়ে নৃশংসভাবে অতর্কিত হামলা চালায়। কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানান, আক্রমণের শিকার লোকজনের ডাক-চিৎকারে তারা এগিয়ে গেলে অস্ত্র নিয়ে তাদের দিকেও তেড়ে আসে সেলিম ও জামালের লোকজন। এক পর্যায়ে খোকন ও তার স্বজনদের বাড়িতে লুটপাট চালায় সেলিম ও জামালের বাহিনী। এদিকে আহত অবস্থায় পড়ে থাকা খোকন ও তার স্বজনদের সকাল সাড়ে সাতটা পর্যন্ত হাসপাতালে নেয়ার জন্যও দেয়নি সেলিম ও জামালের বাহিনী। জামাল ও সেলিম বাহিনী এ সময় আক্রান্তদের ঘরের বেড়া, টিনের চালা, আসবাবপত্র, ধান চাল সব নিয়ে যায়।

এ বিষয়ে মো. সেলিম মিয়া মুঠোফোনে বলেন, তাওহীদের লোকজন তার জমি জোরপূর্বক জবরদখল করে আছে। এবং তার এক ঘরে তাওহীদের লোকজন আগুন লাগিয়ে দেয়। এর জের ধরেই এ সংঘর্ষ হয়। এতে তাদের পক্ষের নুরু সরকার ও জামাল উদ্দিন নামে দুইজন আহত হয়েছে।

গুনধর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: নাজমুল সাকির নুরু শিকদার বলেন, হামলার থবর পেয়ে ভোর ৫টার দিকে আমি ঘটনাস্থলে যাই। ঘটনাটি খুব নৃশংস। হামলাকারীরা আহতদের হাসপাতালে নিতেও বাধা দেয়। পরে পুলিশ ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় আমরা আহতদের হাসপাতালে পাঠাই।

করিমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মুজিবুর রহমান, সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে হামলার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, হামলার ঘটনায় এখনো কাউকে আটক করা যায়নি। এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এলাকায় পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

Similar Posts

error: Content is protected !!