মো. আরিফুল ইসলাম, বাজিতপুর সংবাদদাতা।।
বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে নানা আয়োজনে সারাদেশের মতো কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস-১৬ উদযাপিত হয়েছে। বিজয়ের ৪৫ বছরপূর্তি ও মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে প্রতিবারের মতো এবারও উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন ও উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাপক কর্মসূচী গ্রহণ করে।
বাজিতপুরের ঐতিহ্যবাহী ডাকবাংলো মাঠে ১৬ ডিসেম্বরের প্রথম প্রহরে ৩১বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে শুরু হয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতা। পরে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত ভবনসমূহে পতাকা উত্তোলন। সকাল ৮টায় উপজেলার সকল ইউনিয়নসহ বিভিন্ন ইউনিটের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহের পৃথক পৃথক বিজয় র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। পরে ঐতিহ্যবাহী ডাকবাংলো মাঠে সমবেত হয়ে স্মৃতিস্তম্ভে পুস্পমাল্য অর্পণ করে।
সকাল ৯টায় ডাকবাংলো মাঠে মুক্তিযোদ্ধা, পুলিশ, আনসার-ভিডিপি, বিএনসিসি, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, রোভার স্কাউট, বয় স্কাউট, গার্লস গাইড, স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রদর্শিত হয়। উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভাস্কর দেবনাথ বাপ্পির সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন কিশোরগঞ্জ-০৫ (বাজিতপুর-নিকলী) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো. আফজাল হোসেন, বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সারোয়ার আলম ও পৌর মেয়র আনোয়ার হোসেন আশরাফ। এর আগে প্রধান ও বিশেষ অতিথিবৃন্দ বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত সালাম গ্রহণ করেন কিশোরগঞ্জ-০৫ (বাজিতপুর-নিকলী) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো. আফজাল হোসেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সারোয়ার আলম, পৌর মেয়র আনোয়ার হোসেন আশরাফ। এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভাস্কর দেবনাথ বাপ্পি, বাজিতপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মকবুল হোসেন মোল্লা, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রফিকুল ইসলাম অতিথিবৃন্দের সাথে ছিলেন।
কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান শেষে প্রধান অতিথিকে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের পক্ষ থেকে গেরিলা যুদ্ধের ভাস্কর্য প্রদান করেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রফিকুল ইসলাম ও ডেপুটি কমান্ডার মতিউর রহমান। এছাড়াও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভাস্কর দেবনাথ বাপ্পি।
কুচকাওয়াজের পর মনোজ্ঞ ডিসপ্লে অনুষ্ঠান শেষে বেলা ১১টায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারবর্গের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরে বাদ জুম্মা সকল মসজিদে জাতির শান্তি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। দুপুরে হাসপাতাল ও এতিমখানায় উন্নতমানের খাবার পরিবেশন। বিকাল ৩টায় প্রজেক্টরের মাধ্যমে সকল ইউনিয়ন পরিষদ চত্বর, বিভিন্ন দৃশ্যমান স্থান ও বাজারের মোড়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী। বিকাল ৩.১০ মিনিটে উপজেলা পরিষদ চত্বরে মহিলাদের ক্রীড়ানুষ্ঠান। বিকাল ৩.১৫ মিনিটে ডাকবাংলো মাঠে উপজেলা প্রশাসন বনাম মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রীতি ফুটবল ম্যাচ। বিকাল ৩.৪০ মিনিটে একই ভেন্যুতে বাজিতপুর পৌরসভা বনাম বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার এসোসিয়েশন বাজিতপুরের মধ্যকার প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। পরিশেষে সন্ধ্যা ৬টায় ডাকবাংলো মাঠে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।