আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
বাংলাদেশে বাল্য বিয়ে প্রতিরোধে একটি মোবাইল ফোন অ্যাপ এখন পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করে দেখা হচ্ছে। বাল্য বিয়ে রোধে বাংলাদেশ সরকারের সাথে মিলে কাজ করছে এমন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এই অ্যাপটি তৈরি করেছে। এটি ব্যবহার করবেন বিয়ে নিবন্ধনকারী ইমাম বা ঘটকরা।
অ্যাপটিতে বর বা কনের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, জন্ম নিবন্ধন নম্বর কিংবা স্কুল ছাড়ার সনদের নাম্বার- এই তিনটি নম্বরের কোনো একটি দিলেই জাতীয় তথ্য ভাণ্ডারের তথ্য থেকে তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করা যাবে যে বর এবং কনের বিয়ে করার আইনসঙ্গত বয়স হয়েছে কি-না।
কর্মকর্তারা বলছেন, কুড়িগ্রাম জেলায় তারা ইতিমধ্যেই এটি ব্যবহার করে উৎসাহব্যঞ্জক ফল পেয়েছেন।
যেভাবে কাজ করে এই অ্যাপ :
অ্যাপটি কিভাবে কাজ করে তা বিবিসির পুলক গুপ্তকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ব্যাখ্যা করেছেন প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর সৌম্য গুহ।
“এটি খুব সহজ। এই অ্যাপটি ব্যবহার করবে প্রথমত ম্যারেজ রেজিস্ট্রাররা, যারা বিয়ে নিবন্ধন করেন। দ্বিতীয়ত ঘটকরা। আর তৃতীয় গ্রুপ হচ্ছে যারা বিয়ে পড়ান – মুসলিমদের ক্ষেত্রে সেটা ইমাম বা হিন্দুদের ক্ষেত্রে পণ্ডিত।”
“যে কোন মোবাইল ফোনেই অ্যাপটি ব্যবহার করা সহজ। এনআইডি নম্বর, জন্ম সনদের নম্বর বা স্কুল সার্টিফিকেটের নম্বর – এই তিনটির যে কোন একটি নম্বর দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে অ্যাপটি বলতে পারবে সামনে যে বসে আছে তার বয়স কত।”
কোন বিয়ে অনুমোদন করতে গেলে এই তিনটি দলিলের যে কোন একটি পরীক্ষা করে দেখার কথা। উল্লেখ্য বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী, মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৮ আর ছেলেদের ক্ষেত্রে ২১ বছর।
সৌম্য গুহ বলেন, তাদের এই অ্যাপটি বাংলাদেশের জাতীয় তথ্যভান্ডারের সঙ্গে যুক্ত। কাজেই জাতীয় তথ্যভান্ডারে যে তথ্য আছে, সেটাই এই অ্যাপে দেখা যাবে।
কুড়িগ্রামে এই অ্যাপটি পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহারের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে তিনি বলেন, সেখানে এটি কাজ করছে।
তিনি জানান, এ পর্যন্ত প্রায় এক লাখ বিয়ের ক্ষেত্রে এই অ্যাপটি ব্যবহার করে বয়স যাচাইয়ের চেষ্টা করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত সাড়ে তিন হাজার মেয়ের বয়স ছিল ১৮ বছরের কম। কাজেই অ্যাপটি যে কাজ করছে, এ থেকেই বোঝা যায়।
সৌম্য গুহ জানান, এ বছরের অগাস্ট মাস থেকে সারা দেশে এই অ্যাপটি চালু করা হবে।
সূত্র : বাংলাদেশে বাল্য বিয়ে ঠেকানোর মোবাইল অ্যাপ যেভাবে কাজ করে [বিবিসি বাংলা, ৭ মে ২০১৮]