সৃজন সাহিত্য সংগঠনের বিজয় দিবসের আলোচনা ও তনন হত্যার বিচার দাবি

নিজস্ব প্রতিনিধি ।।

গত ১৬ ডিসেম্বর বুধবার সৃজন সাহিত্য সংগঠনের উদ্যোগে সংগঠনের কার্যালয়ে সৃজন সাহিত্য সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তরুণ কবি সৈয়দ মোনাব্বির আহমেদ তননের হত্যাকারীদের দ্রুত শাস্তির দাবি ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের উপদেষ্টা কবি মুহিবুর রহিম।

তিনি তার আলোচনায় বলেন- আজ মহান বিজয় দিবস। ত্রিশ লক্ষ শহীদ আর দু’ লক্ষ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য নেতৃত্বে বাঙালি ছিনিয়ে এনেছে স্বাধীনতার রক্তিম সূর্য। আমরা আজকের প্রজন্ম গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি তাদের।

কবি মহবিুর রহিম আরো বলেন- আজ তননের হত্যাকাণ্ডে আমরা সবাই মর্মাহত। তনন ছিল সম্ভাবনাময় একজন কবি। তননের মৃত্যুতে ব্যথিত হয়েছেন দেশের আপামর কবি সমাজ। তিনি তননকে শহীদ আখ্যায়িত করে বলেন- তনন ছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারে এ্কজন নিবেদিতপ্রাণ সৈনিক। মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পযন্ত সে এ দায়িত্ব পালন করে গেছে। তার এই অসমাপ্ত কাজ আমাদের এগিয়ে নিতে হবে। তার মৃত্যুকে নিয়ে একটি জাতীয় দৈনিকের মিথ্যা রিপোর্টের তিনি নিন্দা করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেজর (অবঃ) মোবাশ্বিরুল ইবাদ মিশু বলেন, আমার ছোট কোন ভাই নাই। কিন্তু মোনাব্বিরের ব্যবহার আচার-আচরণে আমি মুগ্ধ হয়ে সেই স্থানে বসিয়েছিলাম। শহীদ তননের চলে যাওয়া আমার হৃদয়ে যে কি দাগ কেটেছে তা আমি বুঝাতে পারবো না। তননের হত্যাকারী সেই ঘাতকদের যতদিন পর্যন্ত সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত না হয় ততদিন পর্যন্ত আমরা হাল ছাড়বো না। এর জন্য প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ নিতে আমরা প্রস্তুত।

তিনি আরও বলেন- আমরা যারা নতুন প্রজন্ম স্বাধীনতা যুদ্ধ দেখিনি, আমরা দেশ ও দেশের স্বাধীনতার অবমূল্যায়ন হতে দেব না। এটাই হবে আমাদের অঙ্গীকার।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কবি লিটন হুসাইন জিহাদ বলেন- আজ আমাদের অবস্থা এমন হয়েছে যে আমরা যদি খারাপের মুখোশ উন্মোচন করতে যাই কিংবা তননের মতো অন্যায় কাজে বাধা দিতে চাই তাহলে হয় আমার মতো জেল খাটতে হবে, না হয় তননের মতো মরতে হবে। আজ কিছু লোক তননের লাশ নিয়ে রাজনীতি করেছে। তারা ক্যামেরার সামনে আসতে চেয়েছে। আমি সৃজন সাহিত্য সংগঠনের সাফল্য কামনা করি। আশা করি এই সংগঠন একদিন বাংলাদেশের সাহিত্য অঙ্গনকে প্রভাবিত করবে। তননের অপ্রকাশিত কবিতাগুলো আমরা প্রকাশ করবো আগামী বইমেলাতে এবং ঢাকা বইমেলাতেও খুনিদের শাস্তির দাবিতে আমরা মানববন্ধন করবো।

শুভেচ্ছা বক্তব্যে সৃজন সাহিত্য সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল মোর্সেদ মোয়াজ বলেন, বিজয় দিবসে আমরা মিলিত হয়েছি আনন্দের সাথে কিন্তু আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। তনন ভাইয়ের শূন্যতা আমরা পূরণ করতে পারবো না। তবে তার কাজগুলো চালিয়ে নিয়ে তাকে সবার মাঝে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।

অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহজাহান আহমেদ সাজন। এছাড়া বক্তব্য দেন, গাজী তানভীর আহমেদ, সাইমন মৃধা। কবিতা আবৃত্তি করেন জান্নাতুল ফেরদৌস, মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা, সুহাইল সাদী, মেহেদী হোসেন।

অনুষ্ঠানে কোরান তেলাওয়াত করেন হাফেজ সিফাত ও গীতা পাঠ করেন সূধীন চৌধুরী। দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন তন্ময় দাস ও চিন্ময় সরকার। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন খন্দকার হাফেজ গোলাম মোস্তফা, প্রিয়ম রেজা প্রান্ত, হাসিবুর রহমান, আসরাফ, নয়ন আরো অনেকে। সবশেষে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা, বীরাঙ্গনা ও মোনাব্বির আহমেদ তননের জন্য ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

Similar Posts

error: Content is protected !!