আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
“টাকা দিয়ে আনন্দ কেনা যায় না।” বহু সিনেমায় এমন সংলাপ শুনে আমরা অভ্যস্ত। এমনকি খুঁজলে বহু উপন্যাসেও এমন সংলাপ পাওয়া যাবে। কিন্তু বহু মানুষই এই মতের সঙ্গে একমত নন। তাঁদের বিশ্বাস, টাকা থাকলেই আনন্দ আছে। টাকা না থাকলে কোনও আনন্দ নেই।
যদিও হালের এক সমীক্ষাও বলছে, টাকা থাকা মানেই জীবনে আনন্দ থাকবে— তার কোনও মানে নেই। বরং সমীক্ষায় উঠে এসেছে অন্য তিনটি বিষয়। সেই জিনিসগুলি নাকি মানুষকে অর্থের চেয়েও বেশি আনন্দ দেয়। তেমনই বলছে “গ্রেটার গুড সায়েন্স সেন্টার” নামক গবেষণাকারী সংস্থার সমীক্ষাটি।
(১) সুসম্পর্ক : এই তালিকার একেবারে প্রথমেই আছে সুসম্পর্কের বিষয়টি। বিশেষ করে বৈবাহিক বা প্রেমের জীবন যদি সুখের হয়, তা হলে জীবনে আনন্দের মাত্রা বেড়ে যায়। অর্থনৈতিক অভাবও সেখানে বিশেষ চাপ সৃষ্টি করে না। দক্ষিণ আমেরিকার বেশ কয়েকটি দেশে সমীক্ষা চালিয়ে এই দাবির সপক্ষে অনেকগুলি উদাহরণ উঠে এসেছে। দেখা গিয়েছে, শুধুমাত্র ভালবাসার কারণেই মানুষ অর্থের অভাবের মধ্যেও বেশ আনন্দে আছেন।
(২) শরীরচর্চা : নিয়মিত শরীরচর্চা করলে মন ভাল হয়। কারণ মন ভাল রাখার হরমোনগুলির ক্ষরণ বাড়ে এর ফলে। কিন্তু সেই ভাল থাকার পরিমাণ কতটা? তাকে কি টাকার অঙ্কে ব্যাখ্যা করা যাবে? সমীক্ষা এই প্রশ্নেরও উত্তর দিয়েছে। বলা হয়েছে, একজন গড়পড়তা আমেরিকার নাগরিকের বার্ষিক বেতন যদি ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বাড়ে, তা হলে তিনি যতটা আনন্দ পান, রোজ শরীরচর্চা করলেও ঠিক ততটাই আনন্দ হয়।
(৩) যাতায়াতের সময় : তালিকার প্রথম দু’টি বিষয় পড়েই অবাক হতে পারেন কেউ। টাকার চেয়েও বেশি আনন্দ দেয় এগুলি! সে ক্ষেত্রে তৃতীয় বিষয়টি আরও বিস্ময়কর ঠেকতে পারে তাঁদের কাছে। সমীক্ষাটি বলছে, অফিস বা কর্মক্ষেত্র থেকে যাতায়াতের সময় কমলে, মানুষের মন ভাল হতে থাকে। এবং সময় বাড়লে ঠিক উল্টোটা। এটিকেও সংখ্যায় ব্যাখ্যা করা হয়েছে সমীক্ষায়। কর্মক্ষেত্র থেকে যাতায়াতের সময় ২০ মিনিট বেড়ে গেলে মানুষের ঠিক ততটা বিরক্ত লাগে, যতটা বিরক্ত লাগে বার্ষিক বেতন ১৯ শতাংশ কমে গেলে।
মোদ্দা কথায়, টাকা যে জীবনে আনন্দের একমাত্র উৎস নয়, তা পরিসংখ্যানের মাধ্যমে দেখিয়েছে সমীক্ষাটি। নিঃসন্দেহে অর্থনৈতিক উন্নতি হলে আনন্দ বাড়ে। কিন্তু সবচেয়ে বেশি আনন্দ যে যে জিনিসগুলি দিতে পারে, সেই তালিকার প্রথম তিনে নেই টাকা। সেটিই প্রমাণ করেছে এই সমীক্ষা।
সূত্র : Inc. আনন্দবাজার