জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৬ প্রদান আগামীকাল

আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।

দেশের চলচ্চিত্রাঙ্গনের সর্বোচ্চ মর্যাদাপূর্ণ ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’ আগামীকাল (৮ জুলাই ২০১৮) প্রদান করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন। শ্রেষ্ঠ মেকাপম্যানের পুরস্কার পাচ্ছেন করিমগঞ্জ উপজেলার আশুতিয়াপাড়া গ্রামের মাহাবুব রহমান মানিক।

চলচ্চিত্র শিল্পীদের মেকাপ করছেন মাহাবুব রহমান মানিক

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিকেল সাড়ে তিনটায় এ অনুষ্ঠান শুরু হবে। তথ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, যৌথভাবে তথ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থা (বিএফডিসি) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

চলতি বছরের ৪ এপ্রিল তথ্য মন্ত্রণালয় তাদের ওয়েবসাইটে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৬’র বিজয়ীদের তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে। জাতীয় চলচ্চিত্র বিভাগ নিয়মিত ২৮টি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রদান করে থাকে। তবে ২০১৬ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২৬টি ক্যাটাগরিতে দেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পে বিশেষ অবদানের জন্য সরকার এ বছর এ ২৬ বিভাগে ২৯ জন শিল্পী ও কলাকুশলীকে এ পুরস্কার প্রদান করছে। প্রামাণ্যচিত্রের জন্য পুরস্কার পাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ও একাত্তর মিডিয়া লিমিটেড। বাসস

গেজেট অনুযায়ী এবার যৌথভাবে আজীবন সম্মাননা পাচ্ছেন চলচ্চিত্রের গুণী অভিনয় শিল্পী ফরিদা আক্তার (ববিতা) ও আকবর হোসেন পাঠান (ফারুক)। ২০১৬ সালের এ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে অমিতাভ রেজা চৌধুরী পরিচালিত ‘আয়নাবাজি’ চলচ্চিত্র সাতটি বিভাগে পুরস্কার জিতে নিয়েছে। ছবিটি সেরা পরিচালক, সেরা অভিনেতা, সেরা চিত্রগ্রাহকসহ মোট সাতটি পুরস্কার পাচ্ছে।

পুরস্কার অর্জনের দিক দিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে নাদের চৌধুরী পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘মেয়েটি এখন কোথায় যাবে’। সেরা গীতিকার, সেরা সুরকার ও সেরা সঙ্গীত পরিচালকসহ চারটি পুরস্কার জিতেছে এ ছবি। তবে এবারের আসরে সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কার জিতে নিয়েছে ইমপ্রেস টেলিফিল্ম প্রযোজিত ও তৌকীর আহমেদ পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘অজ্ঞাতনামা’। সেরা চলচ্চিত্রের পাশাপাশি ছবিটি সেরা কাহিনীকার ও সেরা খল অভিনেতার পুরস্কারও জিতে নিয়েছে। এ আসরে গৌতম ঘোষের ‘শঙ্খচিল’ চলচ্চিত্রও পেয়েছে তিনটি পুরস্কার।

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানটি জাকজমকপূর্ণ করে তুলতে এখন মহড়ায় ব্যস্ত চলচ্চিত্রশিল্পীরা। এ নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরাও। অনুষ্ঠানে ১৫ মিনিটের একটি সাংস্কৃতিক পর্ব পরিবেশন করবেন চলচ্চিত্রের তারকা শিল্পীরা। আর অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করবেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস ও চিত্রনায়িকা পূর্ণিমা।

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের এ সাংস্কৃতিক পর্বে নাচ পরিবেশন করার কথা রয়েছে রিয়াজ-অপু বিশ্বাস, জায়েদ খান-সাহারা, আমিন খান-পপি, ইমন-তমা মির্জা ও সাইমন-সিমলা জুটির। এ জুটিগুলো এরই মধ্যে এফডিসির মহড়াতেও অংশ নিচ্ছেন। নাচগুলোর কোরিওগ্রাফি করছেন মাসুম বাবুল ও ইভান শাহরিয়ার সোহাগ। মডেল ও অভিনেত্রী সাদিয়া ইসলাম মৌ অনুষ্ঠানে দু’টি বিশেষ গানে নাচ পরিবেশন করবেন। জানা গেছে, পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রীর সামনে বাংলাদেশি ছবির ১৫টি সাড়া-জাগানো গানের একটি পরিবেশনাও থাকবে।

একনজরে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৬

শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র : অজ্ঞাতনামা
শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র : ঘ্রাণ
শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র : জন্মসাথী
শ্রেষ্ঠ পরিচালক : অমিতাভ রেজা চৌধুরী (আয়নাবাজি)
শ্রেষ্ঠ অভিনেতা (প্রধান চরিত্র) : চঞ্চল চৌধুরী (আয়নাবাজি)
শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী (প্রধান চরিত্র) : যৌথভাবে আফরোজা ইমরোজ তিশা (অস্তিত্ব) ও কুসুম শিকদার (শঙ্খচিল)
শ্রেষ্ঠ অভিনেতা (পার্শ্ব চরিত্র) : যৌথভাবে আলীরাজ (পুড়ে যায় মন) ও ফজলুর রহমান বাবু (মেয়েটি এখন কোথায় যাবে)
শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী (পার্শ্ব চরিত্র) : তানিয়া আহমেদ (কৃষ্ণপ)
শ্রেষ্ঠ খল অভিনেতা : শহীদুজ্জামান সেলিম (অজ্ঞাতনামা)
শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী : আনুম রহমান খান সাঁঝবাতি (শঙ্খচিল)
শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক : ইমন সাহা (মেয়েটি এখন কোথায় যাবে)
শ্রেষ্ঠ নৃত্য পরিচালক : হাবিব (নিয়তি)
শ্রেষ্ঠ গায়ক : ওয়াকিল আহমেদ (দর্পণ বিসর্জন, গান : অমৃত মেঘের বাড়ি…)
শ্রেষ্ঠ গায়িকা: মেহের আফরোজ শাওন (কৃষ্ণপ, গান : যদি মন কাঁদে…)
শ্রেষ্ঠ গীতিকার: গাজী মাজহারুল আনোয়ার (মেয়েটি এখন কোথায় যাবে, গান : বিধিরে ও বিধি বিধি..)
শ্রেষ্ঠ সুরকার : ইমন সাহা (মেয়েটি এখন কোথায় যাবে, গান : বিধিরে ও বিধি বিধি..)
শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার : তৌকীর আহমেদ (অজ্ঞাতনামা)
শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার : অনম বিশ্বাস ও গাউসুল আলম (আয়নাবাজি)
শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা : সৈয়দা রুবাইয়াত হোসেন (আন্ডার কনস্ট্রাকশন)
শ্রেষ্ঠ সম্পাদক : ইকবাল আহসানুল কবির (আয়নাবাজি)
শ্রেষ্ঠ শিল্পনির্দেশক : উত্তম গুহ (শঙ্খচিল)
শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক : রাশেদ জামান (আয়নাবাজি)
শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক : রিপন নাথ (আয়নাবাজি)
শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জা : যৌথভাবে সাত্তার (নিয়তি) ও ফারজানা সান (আয়নাবাজি)
শ্রেষ্ঠ মেকাপম্যান : মানিক (আন্ডার কনস্ট্রাকশন)

Similar Posts

error: Content is protected !!