বিশেষ প্রতিনিধি ।।
কিশোরগঞ্জের নিকলীতে এক কিশোরী বধূকে (১৩) হাত-পা বেঁধে দেহ ব্যবসায় করানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে স্বামী-শাশুড়ির বিরুদ্ধে। নির্যাতীত কিশোরী বাবার তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
অভিযুক্তরা হলেন- কিশোরী বধূর স্বামী মো. তারেক (২৪), শ্বশুর জাহেদ আলী (৫০), দেবর মো. শরীফ (২২), শাশুরি ছফুরণ (৪৫), ফুফাত বোন শিরীন আক্তার (৩০), ধর্ষক হোসেন মিয়া (৩২), সাত্তার (৩৮) ও মুসলিম (৪৫)।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিবাহের পর থেকেই নিকলী উপজেলা সদরের মাইজহাটি গ্রামের জাহেদ আলীর পুত্র স্বামী তারেক মিয়া প্রতি রাতে পরপুরুষের সাথে রাত্রি যাপনে বাধ্য করে। কিশোরী বধূ বাঁধা দিলে তাকে স্বামী তারেক ও শাশুড়ি ছফুরণ ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখে। বাবার বাড়ির সাথে যোগাযোগ করতে দেয় না।
তারা ওই কিশোরীকে কথামতো কাজ না করলে বিক্রি করে দেয়ার কথা জানায়। ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে স্বামী তারেক ধর্ষক হোসেন মিয়া, সাত্তার ও মুসলিমকে নিয়ে বাড়িতে আসে। তাদের সাথে কিশোরীকে রাত্রি যাপনের প্রস্তাব দেয়। রাজী না হওয়ায় দেবর শরীফ, শ্বশুর জাহেদ আলী, শিরিণ আক্তারের সহযোগিতায় ধর্ষকরা কিশোরী বধূটিকে হাত-পা-মুখ বাঁধে। একটি অটো রিকশায় উঠিয়ে নিয়ে যায়।
আধ ঘণ্টার পথ দূরের একটি সেমিপাকা ঘরে নিয়ে তোলে। রাতভর পাশবিক নির্যাতন করে। মোবাইল ফোনে অজ্ঞাত ব্যক্তির হাতে ভোর হলেই তুলে দেয়ার কথা বলে। শেষ রাতে কোনো রকম মুখের বাঁধন খুলে চিৎকার শুরু করলে গ্রামবাসী ওই বধূকে উদ্ধার করেন। ধর্ষকরা পালিয়ে যায়।
উদ্ধারকারীদের কাছে ওই বধূ জানতে পারেন আটকে রাখা স্থানটি উপজেলার জারইতলা ইউনিয়নের সাজনপুর গ্রাম। গ্রামবাসীরা কিশোরীর বাবার মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানায়। দিনমজুর বাবা ইজ্জতের কথা ভেবে মেয়েকে বাড়িতে রেখে চিকিৎসা দেন। নিকলী থানায় মামলা করতে গেলে কিশোরীর পরিবারকে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয়া হয়।
২৪ সেপ্টেম্বর কিশোরী বধূ বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল নং-২, কিশোরগঞ্জ-এ পিটিশন মামলা দায়ের করেন।