চট্টগ্রামের কাছিম মাজার

চট্টগ্রামের কাছিম মাজার

নাওমি শিহাব নাঈ

বাংলা ভাষান্তর : বদরুজ্জামান আলমগীর

 

একচ্ছত্র ময়লা পানির উপর বরাবর
নিরেট পিঠের ছাঁচ ভেসে ওঠে-
আর মুরিদানরা তাঁর দিকে ছুঁড়ে দেয় ভনরুটির টুকরা।
বক্ষ দুরুদুরু- যদি কচ্ছপ বাবার নেকনজরে পড়ে
তার ছুঁড়ে দেয়া খাবার টুকরা তবেই সারা,
দিলের মকসুদ পূর্ণ হবে শতভাগ!

এই ক্লেদ ময়লার তীব্র ভ্যাপসা গন্ধে হাঁসফাঁশ
করে উঠি; আমি বরং খাড়া বেয়ে উপরে উঠে যাই-
যেখানে বাঞ্চাশিকারীরা লাল-নীল সুতার রৌশনে
গাছের ডাল ভরিয়ে তোলে।

কোন সুদূরের বাসনা আমারও অন্তঃপুর বুঝি
ঝিলিকে ছুঁয়ে যায়।

অদূরে রিকশার ভিড়, আরো ভিড় টুংটাং ঘন্টাধ্বনি।

আমার পাশের বন্ধুটি কেমন মনমরা হয়ে থাকে,
আশা বুঝি পূর্ণ হলো না- আমার মনের বাসনা-
ছুঁড়ে দেয়া রুটি তার অনির্দিষ্ট, ভাসতে থাকে কাদাজল
পানির ওপর: রুটি তো ছুঁলো না দয়াল কাছিম।

আমি বলি, তারা খেয়েথুয়ে পেট পূরে আছে।

বন্ধুটি বলে, তা-ও ইনারা সবসময় আমারটা খায়!

আমি সহযাত্রীকে বলি, আমার রোমাঞ্চ লাগে-
তারা যে দোজখ থেকে আসে!

ওইদিন তার জন্মদিন ছিল।
আমরা সফেদ টেবিলের উপর গলদা চিংড়ির
নৈশভোজে মাতি।

এ-এমন এক ভূখণ্ড যেখানে প্রতিবছর গ্রামের পর গ্রাম
বানের তোড়ে ভাসে; তাতে কার কি-ইবা আসে যায়,
অন্যদুনিয়ায় কারো টিকিটাও নড়ে না।

এতোক্ষণে শিথিল ওয়েটার কাঁচা পয়সার গরমে
কিছুটা বুঝি নড়ে-চড়ে ওঠে।

সে রাতে আমার মশারিতে দেখি একখানা ছিদ্র!
আর যায় কোথা, আমি সারারাত বেইজবলের পিচিং করি।
তবুও দীর্ঘ রজনী তলিয়ে যাচ্ছিলাম স্বপ্নে- গলে যাচ্ছিলাম,
যদি ধরতে পারি কিছু দৃশ্যমান খাবার, কিছু
সত্যিকার আহার!

আমি একটি যোগসূত্রে আকুল হাতড়াতে থাকি-
বলার জন্য কাতরাতে থাকি;
শোন, এখানে জল, জল- কোথায় স্থলভাগ, শুকনো মাটি!

Similar Posts

error: Content is protected !!