বরফ সংকটে নিকলীর মাছ ব্যবসায়ীরা

সংবাদদাতা ।।
হাওর থেকে ডুলি ভরা মাছ আহরণ করে দামপাড়া বাজারে এসে দেখে হাটের কেনাবেচা শেষ। তখন বেলা ১টা। মাছে বরফ দিয়ে রেখে দেয়া ছাড়া বিকল্প নেই। বাজার পুনরায় শুরু হলে পরের দিন বিক্রি করার সিদ্বান্ত নেন মাছ ব্যবসায়ী। বরফ আনতে মজলিশপুরে একটি ফ্যাক্টরিতে যান। বরফ না পেয়ে খালি হাতে ফিরে আসেন। ব্যবসায় ক্ষতি কমানোর আশায় মাছ নিয়ে ৩ কিলোমিটার দূরে নিকলী সদরে একটি আইসক্রীম ফ্যাক্টরিতে আসেন। সেখানেও বরফ পাওয়া গেল না। গত পরশু দিন রোববার বরফের দুঃষ্প্রাপ্য মাছ নিয়ে এমন সংকটে পড়েছিলেন দামপাড়া বাজারের ক্ষুদ্র মাছ ব্যবসায়ী শুক্কুর আলী।
উপজেলাতে তার মতো এমন আরো ব্যবসায়ী আছে যারা প্রায় সময় মাছের জন্য বরফ না পেয়ে বিপাকে পড়ে। উপজেলাতে মাত্র ৩টি ফ্যাক্টরিতে উৎপাদিত বরফে ব্যবসায়ীদের চাহিদা মিটে না। বিদ্যুত না থাকলে সংকট আরো তীব্র হয়।
নিকলীর হাওর থেকে সারা বছরই মাছ আহরণ করা হয়। উপজেলার ১০টি ছোট-বড় নদী, ১৫টি বিল ও ৩৮টি জলমহাল থেকে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার দেশী সুস্বাদু মাছ শিকার করা হয়। মিঠা পানির মাছের বেশি কদর থাকায় এগুলো এলাকার বাইরে চালান দেয়া হয়।
রাজধানী ঢাকাসহ সিলেট, ভৈরব থেকে দেশের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বিক্রি করা হয়। কিন্তু উপজেলাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে বরফ না থাকায় মূল্যবান মাছের চালান প্রায় সময় পচে নষ্ট হয়ে যায়।
বরফের দুস্প্রাপ্যতায় পচে যাওয়া মাছের পরিমাণ বছর শেষে ক্ষতি হয় প্রায় কোটি টাকা। নিকলী নতুন বাজারের মাছের আড়তের মালিক ব্যবসায়ী তাহের আলী জানান, মাছ সংরক্ষণের পর্যাপ্ত ও আধুনিক ব্যবস্থা না থাকায় প্রায় সময় ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। আরেক ব্যবসায়ী কারার ইফতেখার আহমেদ আরিফ জানান, উপজেলার জলমহালগুলি থেকে সরকার কোটি টাকা রাজস্ব আয় করে। অথচ মাছের সংরক্ষণের জন্য কোনো হিমাগার নেই। ব্যবসায়ী ও জলমহালের ইজারাদারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলায় একটি হিমাগারের চাহিদার কথা। তারা জানান, ১৯৮০ সনে সরকারিভাবে নিকলীতে একটি হিমাগার তৈরির পরিকল্পনা নেয়া হলেও আজো পর্যন্ত সেটি নির্মাণ হয়নি। তাই ব্যবসায়ীদের দাবি মাছ সংরক্ষণে উন্নত ব্যবস্থাপনা তৈরিতে উর্ধ্বতন মহল এগিয়ে আসবে।

Similar Posts

error: Content is protected !!