নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
২০ নভেম্বর রোববার থেকে শুরু হয়ে ২৭ নভেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা শেষ হলো। নিকলী থানায় সাতটি ইউনিয়নে সাতটি কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনকারী কেন্দ্র পরিদর্শক, সহকারী কেন্দ্র সুপার, কেন্দ্র সুপার সকলেই তাদের সম্মানী গ্রহণে অনীহা প্রকাশ করেন।
বিভিন্ন কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনকারী পরিদর্শক ও দায়িত্ববানদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের জন্য নির্ধারিত সম্মানী কেন্দ্র সচিবের মাধ্যমে পৌছে দেয়ার সময় প্রত্যেকের কাছ থেকে ট্যাক্স ও ভ্যাট বাবদ টাকা কর্তন করায় তারা কেউ তা গ্রহণ করেননি।
কর্তব্য পালনকারী কক্ষ পরিদর্শকবৃন্দ নিকলী থানার পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন থানার কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনকারীদের সাথে কথা বলে জানতে পারেন তাদের কারোরই ট্যাক্স ও ভ্যাট কর্তন করা হয়নি।
উল্লেখ্য, পরিদর্শকদের সম্মানী প্রদানের জন্য যে তালিকা তৈরি করা হয় সেটিতে নিয়মানুযায়ী কর্তন করা হলে তাতে শিক্ষা কর্মকর্তার স্বাক্ষর ও সীল থাকার কথা। কিন্তু, যে তালিকা প্রেরণ করা হয় তার কোনো তালিকাতেই থানা/ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার স্বাক্ষর ও সীল না থাকায় তারা তা গ্রহণ করেনি।
সম্মানী গ্রহণ না করায় শিক্ষা কর্মকর্তা বিভিন্ন কেন্দ্র সচিবকে মৌখিকভাবে জানান যে তাকে হিসাব অফিস থেকে বলা হয়েছে যদি সম্মানী লেখা থাকে তার থেকে ট্যাক্স ও ভ্যাট কর্তনযোগ্য। কিন্তু তিনি তার সপক্ষে কাউকে কোনো সরকারি দলিল উপস্থাপন করেননি। শুধুমাত্র তার ও শিক্ষা অফিসের কিছু অসৎ কর্মকর্তার স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদ হিসাবে নিকলী থানায় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় দায়িত্ব পালনকারী কেউ সম্মানী গ্রহণ করেননি। ভুক্তভোগী শিক্ষকদের অনেকেই বলেছেন, বিষয়টি সমাধানের জন্য উপজেলা চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছে।
নিকলী থানা শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোঃ আব্দুস ছাত্তার, সাধারণ সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন, নিকলী ইউনিয়নের কেন্দ্র সচিব দিল আফরোজ মুন্নী, কেন্দ্র সুপার বিন কাশেম ছাড়াও দামপাড়া কারার মাহতাব উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনকারী কেন্দ্র পরিদর্শক বিপ্লব দেবনাথসহ দায়িত্ব পালনকারী বিভিন্ন শিক্ষকের সাথেও কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তাদের বক্তব্য, অন্য কোন থানায় এভাবে ইনকাম ট্যাক্স ও ভ্যাট কর্তন করা হয়নি। এজন্য আমরা এই বৈষম্যমূলক সম্মানী গ্রহণ করব না, যতক্ষণ না সরকারি কোনো আদেশ আমাদের প্রদর্শন করা হয়। শুধুমাত্র থানা শিক্ষা কর্মকর্তার মৌখিক নির্দেশনা মেনে নেয়া সম্ভব নয় বিধায় এই সম্মানি গ্রহণ করিনি।
ছাতিরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব মাহবুবুল হক রতন বলেন, অন্যান্য বছর কোনো ধরনের ইনকাম ট্যাক্স কর্তন করা হতো না। শুধুমাত্র রেভিনিউ টিকেট বাবদ ১০ টাকা নেয়া হতো। আর এ বছরই ব্যতিক্রম হিসাবে ১০% ইনকাম ট্যাক্স কর্তন করা হয়।
থানা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু তাহের ভূইয়ার সাথে মোবাইলে কথা হলে তিনি বলেন, কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনকারী কোনো শিক্ষকই এই বিভাজনের জন্য সম্মানী গ্রহণ করেননি বলে আমি শুনেছি। বিষয়টি সুরাহা করা যায় কিনা দেখা যাক বলে জানান। তালিকা প্রদান ও স্বাক্ষর করা প্রসঙ্গে তিনি জানান, এতে স্বাক্ষরের প্রয়োজন হয় না। প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসাবে স্বাক্ষর পরেও করে নেয়া যায়। অন্যান্য বছরও সম্মানী প্রদান করা হয় এবং তা সরাসরি ও সামনাসামনি প্রদান করা হয়। এ বছরই কেবল ব্যতিক্রম হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীতে মাদ্রাসা থেকে ৩১৭ এবং স্কুল থেকে ২৩৯৯ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়।