বিশেষ প্রতিনিধি ।।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর আয়োজিত সপ্তাহব্যাপী নানান অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। “বিজয় উৎসব ২০১৭ মানবাধিকার দিবস থেকে বিজয় দিবস” শিরোনামে ১০ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলমান এই অনুষ্ঠানের সোমবার (১১ ডিসেম্বর) ছিলো দ্বিতীয় দিন। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের উন্মুক্ত মঞ্চে এদিন বিকাল ৩টা থেকে শুরু হয় “বুদ্ধি” ও “গর্ত” নামে দু’টি পথনাটক এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক দলের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠানে বিকাল ৫টায় “কিশোরগঞ্জ গণসাংস্কৃতিক সংস্থা”র পরিবেশন শুরু করে জারি, সারি গানের। উপস্থিত দর্শক-শ্রোতাদের টানা দুই ঘণ্টা মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখেন এই গণসাংস্কৃতিক সংস্থার সদস্যরা। পুরো সময়টায় মুক্তমঞ্চকে তারা ভাটির ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচের পূর্ণ আবহ তৈরি করে তোলেন।
জারিগানের সুর, তাল ও আবহে মনে হচ্ছিল ঢাকা শহরের আগারগাঁওয়ে অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ভেতরটা কোনো ইট-পাথরের বিল্ডিং নয়। যেন কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী থানার সোয়াইজনী নদীর বাইচের নৌকার থলা (নৌকা বাইচের জন্য যে বিস্তৃত জায়গা ব্যবহার করা হয়)। চারদিক থেকে কানায় কানায় পূর্ণ ছিল দর্শক। দৃশ্যটিও ছিল চমৎকার।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সামনের অল্প লেকের পানিতে ভাসানো ছিল ছোট্ট একটি নৌকা। নৌকা বাইচের সময় যে হাইর (জারি) গাওয়া হয় সেগুলো একে একে তুলে ধরা হয়। মানুষজন শুনছিল খুবই মনোযোগ সহকারে। পারিপার্শ্বিক পরিবেশ ও কিশোরগঞ্জ গণসাংস্কৃতিক সংস্থার পরিবেশনায় পুরোপুরিই উঠে এসেছিল নৌকাবাইচের সেই দৃশ্য।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন আমাদের নিকলী সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ গণসাংস্কৃতিক সংস্থার কর্ণধার নিকলীর কৃতি সন্তান খায়রুল আলম বাদল। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আমাদের নিকলী ব্যবস্থাপনা সম্পাদকও। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রাঙ্গণ হয়ে উঠেছিল এক কিশোরগঞ্জ, একটি নিকলী। হয়ে উঠেছিল নিকলীর নৌকা বাইচের থলা।
অনুষ্ঠান শুরুর আগে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি রবিউল হুসাইন।