বহুল বিতর্কিত চরক পূজা এবার নিকলীতে!

বিশেষ প্রতিনিধি ।।

ভারতীয় সন্যাসী দলের আয়োজনে গত রোববার (১৭ জুন ২০১৮) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কিশোরগঞ্জের নিকলী শহিদ স্মরণিকা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বহুল বিতর্কিত চরকপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপস্থাপনা, উপনিষদ উপাখ্যান নাট্য, চোখ ধাঁধানো কসরত শেষে যুবকদ্বয়ের বড়শিগাঁথা ঘুর্ণনে কয়েক হাজার উপস্থিতির ভীতি, মুগ্ধতা ঈদের আমেজে যোগ করে এক নতুন মাত্রা।

জানা যায়, জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার শনকান্দা গ্রামের বাসিন্দা জীবন বর্মণ নিকলী উপজেলা সদরের ভবানীপুর গ্রামে বিয়ে করেন। বিয়ের পর স্ত্রীকে বাপের বাড়ি রেখে চলে যান ভারতে। গোহাটি জেলার শীলচরে চরকপূজারি দলের সদস্য হয়ে তন্ত্র-মন্ত্রে দীক্ষা নেন। দ্বিতীয় বিয়েও করেন শীলচরেই। জীবন সন্যাসি নামে পরিচিত হয়ে উঠেন। গড়ে তোলেন চরকপূজারি দল। ভারতের বিভিন্ন এলাকায় চরকপূজা করেই নিজের এবং দলের সদস্যদের জীবিকা অর্জন করেন। সপ্তাহকাল আগে স্বদল নিয়ে বেড়াতে আসেন প্রথম পক্ষের শ্বশুরালয় নিকলীতে। স্থানীয় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উৎসাহে উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে দলটি পূজার আয়োজন করে।

পিঠে বড়শিগাঁথা অবস্থায় কথা হয় নীরাঞ্জন দাসের সাথে। তিনি জানান, তার গুরু জীবন বর্মণ। এর আগে তিনি ভারতে গোহাটি, মিজুরামসহ ৫বার চড়কে ঝুলেছেন। এখন ৬ষ্ঠ। বড়শিগাঁথা অবস্থায় ঘুরানোর সময়ও তার কোন ব্যথা অনুভূত হয় না। সব ভোলানাথের কৃপা।

একই বক্তব্য অপর প্রান্তে ঝুলে থাকা কুটি বর্মনেরও (২২)।

তান্ত্রিক জীবন সন্যাসির সাথে কথা হলে তিনি জানান, বৈধ কাগজপত্র নিয়ে তার দল এ দেশে এসেছেন। অনুমতির মেয়াদ শেষের আগে বাংলাদেশে আরও দুই স্থানে তিনি এ পূজা করার কথা রয়েছে। অনেকেই যোগাযোগ করছে। পূজার সংখ্যা বাড়াবো কি না ভাবনায় আছি।

পূজা দেখতে আসা পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী হাজরা মোমেন প্রভা জানান, সচরাচর দেখা যায় না এমন সব যাদু দেখেছি। ভালো লেগেছে। তবে বড়শিগাঁথা মানুষকে ঝুলন্ত ঘুরানো দেখে ভয় লেগেছে। তবে যাদু-মন্ত্র ভেবে সামলে নিয়েছি।

দর্শক সুখেন দাস জানান, হিন্দু ধর্মের নানা কাহিনী নৃত্যনাট্যে উপস্থাপন করা হয়েছে। ধর্মীয় বিশ্বাস মানুষের মাঝে দৃঢ় হওয়ার পাশাপাশি উপভোগ্য বিনোদনও বটে। সব মিলিয়ে সুন্দর অনুষ্ঠান বলা যায়।

Similar Posts

error: Content is protected !!