মহাঅষ্টমী : কুমারী পূজা উদযাপিত

আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।

শারদীয় দুর্গোৎসবের তৃতীয় দিনে আজ বুধবার (১৭ অক্টোবর ২০১৮) ছিল মহাঅষ্টমী। রাজধানীসহ সারাদেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নারীতে ‘পরমার্থ দর্শন ও পরমার্থ অর্জন’- এ বিশ্বাস নিয়ে দুর্গোৎসবের অষ্টমী তিথিতে ‘সর্ববিদ্যাস্বরূপিনী’ কুমারী রূপে ‘দেবী দুর্গার’ বন্দনায় পূজা-অর্চণা ও আরাধনায় মেতে উঠেন।

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, যে ত্রিশক্তির বলে বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি-স্থিতি-লয়ের চক্রে আবর্তিত হচ্ছে, সেই শক্তি বীজ আকারে কুমারীতে নিহিত। সেই বিশ্বাস থেকেই দেবী দুর্গার কুমারীরূপের আরাধনা করেন ভক্তরা।

রাজধানীর গোপিবাগে রামকৃষ্ণ মিশনে পালিত হয় কুমারী পূজা

সাধক রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব বহু বছর আগে নিজের স্ত্রী সারদা দেবীকে মাতৃজ্ঞানে যে পূজা করেছিলেন, তারই ধারাবাহিকতায় উপমহাদেশের মিশন ও মঠগুলোতে চলছে কুমারী পূজা। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, নারীর সম্মান, মানুষের সম্মান আর ঈশ্বরের আরাধনাই কুমারী পূজার শিক্ষা।

সকাল থেকে বিরামহীন ঢাকের আওয়াজের সঙ্গে থেমে থেমে চলে কাসর ঘণ্টা, শঙ্খনাদ আর উলুধ্বনি। এরই মাঝে চলে ভক্তিগীতি- ‘জাগো দুর্গা, দশভুজা জগজ্জননী মা’, ‘শারদা শারদা রাগে’, ‘দুর্গতিনাশিনী দুর্গা মা, শুভমতিদায়িনী দুর্গা মা’। আর দুর্গাপূজার মণ্ডপে চলে চণ্ডি পাঠের মাধ্যমে দেবীর অর্চণা। বাসস

হবিগঞ্জে কুমারী পূজা
সারাদেশের মতো হবিগঞ্জ জেলার রামকৃষ্ণ মিশনেও আজ হাজার হাজার ভক্তের উপস্থিতিতে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ১০টায় অষ্টমী তিথিতে অপরাজিতা নামে পূজিত হন ৯ বছর বয়সী ব্রাহ্মণকন্যা জয়িতা চক্রবর্তী। কুমারী জয়িতা হবিগঞ্জ পৌরসভার চিড়াকান্দি বাগানবাড়ি এলাকার অসিত চক্রবর্তী ও সোনালী চক্রবর্তীর মেয়ে। সে বিকেজিসি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী।

হবিগঞ্জে রামকৃষ্ণ মিশনে পালিত হয় কুমারী পূজা

এদিকে, কুমারী পূজা দেখতে হবিগঞ্জ জেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থান থেকে হাজারো পূণ্যার্থী সমবেত হন। পূণ্যার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে রামকৃষ্ণ মিশন এলাকা।

বাহুবলে কুমারী পূজা
বাহুবল উপজেলার জয়পুরে অবস্থিত জেলার সবচেয়ে বড় সনাতন ধর্মালম্ভীদের তীর্থ স্থান শচী অঙ্গণে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। অগনিত ভক্তের পুজা অর্চনার মধ্য দিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের শারদীয় দুর্গাপূজার মহাঅষ্টমীর মূল আকর্ষণ কুমারী পূজায় এ বছর ১১ বছর বয়সী এক কণ্যা শিশু কুমারী হিসাবে পূজিত হন। বয়স অনুসারে তার নামকরণ করা হয়েছে রুদ্ররানী। বাহুবল পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক অভিজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, সকাল ১১টার দিকে ঢাক ঢোল ও শংখ বাজিয়ে উলুধ্বনির মাধ্যমে কুমারীকে দেবী সাজিয়ে আনা হয় পূজার বেদীতে। বসান হয় সুসজ্জিত আসনে। এরপর শুরু হয় পূজা অর্চনা। ১২টার মাঝে শেষ হয় সকল আনুষ্ঠানিকতার। এর আগে কুমারীকে স্নান করিয়ে নতুন কাপড় পরানো হয়। হাতে দেয়া হয় ফুল, কপালে সিঁদুরের তিলক এবং পায়ে আলতা।

Similar Posts

error: Content is protected !!