বয়ঃবৃদ্ধির সাথে সাথে মানুষের মাংসপেশি শিথিল হয়ে আসে। শক্তি কমে যায়। আর এই অবস্থাকে চিকিৎসকেরা বলেন সারকোপেনিয়া (Sarcopenia), তাই শক্ত সবল থাকতে নিয়মিত ব্যায়াম অত্যাবশ্যক। ব্যায়াম মাংসপেশিতে শক্তি আনে। মস্তিষ্কে ও হার্টে অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, খাওয়া-দাওয়াও যথেষ্ট সহায়ক হয়।
সম্প্রতি বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা যায়, যথেষ্ট পরিমাণ উত্তম প্রোটিন মাংসপেশিতে শক্তি আনয়ন করে। যুক্তরাজ্যের এক গবেষণায় দেখা যায়, তৈলাক্ত বা চর্বিযুক্ত মাছ খেলে বয়স্ক ও প্রাপ্তবয়স্কদের দেহে প্রয়োজনীয় শক্তি আসে। এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে আমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনে। সমীক্ষায় দেখা যায়, গবেষকেরা তিন হাজার নর-নারীর খাওয়া-দাওয়ার বা খাদ্য ও পুষ্টি গ্রহণের পরিমাপ জরিপ করেছেন। তাদের বয়স ছিল ৫৯ থেকে ৭৩ বছর বয়সের মধ্যে। তাদের শক্তি-সামর্থ্য পরীক্ষা করে তারা এই অভিমত প্রকাশ করেছেন যে, বার্ধক্যে চর্বিযুক্ত মাছ খেলে আঁকড়ে যাওয়া মাংসপেশি সবল ও সতেজ হয়। সেইসাথে ব্যায়াম করলে দ্রুত ফল পাওয়া যায়। এ ছাড়া চর্বিযুক্ত মাছের সাথে ফলমূল, সবুজ শাকসবজি, সেরিয়াল যথেষ্ট সহায়ক। তবে চর্বিযুক্ত মাছ সর্বশ্রেষ্ঠ। মহিলাদের চর্বিযুক্ত মাছ তাদের মাংসপেশিতে দ্রুত শক্তি আনে। দৈনিক না হলেও সপ্তাহে যদি কমপক্ষে তিন দিন চর্বিযুক্ত মাছ খাওয়া যায়, তাহলে বৃদ্ধ নারী-পুরুষ উভয়ই উপকৃত হতে পারেন। এর ফলে তাদের দেহে সামান্য ব্যথা-বেদনাও দূরীভূত হয়। সর্বোপরি সামুদ্রিক টুনা, পাঙ্গাশ, সরপুঁটি, বোয়াল, সারদিন মাছ বেশ চর্বিযুক্ত। আর এগুলো সপ্তাহে দু’তিন দিন খাওয়া যেতে পারে। কারণ এসবে থাকে পর্যাপ্ত ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড। মনে রাখবেন, দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় চর্বিযুক্ত মাছই হতে পারে চিরযৌবন লাভের অনন্য জাদুরকাঠি। সুতরাং আর দেরি নয়।
লেখক : ডা: এ কে এম মাসুদ পারভেজ