মাথাব্যথার কারণ ও লাঘবের উপায়

আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।

মাথাব্যথার সাথে পরিচিত নয় এমন মানুষের সংখ্যা বোধহয় খুব কমই। মাথাব্যথার কারণ, ধরণ বা মুক্তি পাওয়ার উপায়ই বা কী? জেনে নিন এই ছবিঘর থেকে।

মাথাব্যথা
মাথাব্যথার কষ্ট কম-বেশি আমরা সবাই জানি। একেক জনের একেক রকমের মাথাব্যথা হয় এবং এর কারণও থাকে ভিন্ন ভিন্ন। জার্মানিতে লাখ লাখ মানুষ নিয়মিত মাথাব্যথায় ভুগছেন আর তাঁদের মধ্যে আনুমানিক ৮০,০০০ মানুষের সমস্যা অনেক বেশি, যাঁদের বিশেষজ্ঞরা সাহায্য করেন।

কারণ খুঁজে পাওয়া কঠিন
মাথাব্যথা এমনই একটি রোগ যে রোগের আসল কারণ খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন। কারণ প্রশ্ন হলো, অতিরিক্ত অর্থাৎ পুরো মাথা ব্যথা, মাথার যে কোনো একদিকে ব্যথা, নাকি হালকা ব্যথা? অন্যদিকে ব্যথার কারণ স্ট্রেস, ভয়, শারীরিক কোনো সমস্যা, বিষণ্ণতা, ওষুধ সেবন, অ্যালকোহল পান, কম ঘুম, পরীক্ষার চাপ, আবহাওয়া বা তাপমাত্রার ওঠানামা নাকি অন্য কোনো মানসিক সমস্যা, সেটা খুঁজে পাওয়া খুব সহজ নয়।

সাধারণ ব্যথা
ছোটখাটো কোনো কারণেই সাধারণ বা হালকা মাথাব্যথা হতে পারে। এ ক্ষেত্রে প্যারাসিটামলের মতো কোনো ওষুধেই সেরে যেতে পারে ব্যথা। নিয়মিত কোনো ব্যায়ামও উপকারে আসবে।

মাইগ্রেন
মাথার একপাশে ব্যথা এবং ব্যথার সাথে বমি বমি ভাবও হয় যাকে মাইগ্রেন বলা হয়ে থাকে। স্নায়ুকোষের প্রদাহ মাইগ্রেনের কারণ হয়ে থাকে। নিয়মিত ব্যায়াম, যোগব্যায়াম, করা যেতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ আছে কিনা লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন। তাছাড়া বমি ভাবের জন্য আলাদা ওষুধ সেবন করা যেতে পারে।

নিয়মিত মাথাব্যথা
যাদের নিয়মিত মাথাব্যথা বা ক্রনিক মাথাব্যথা, অর্থাৎ মাসে ১০ থেকে ১৫ বার, তাদের ওষুধ সেবন করতে হয়। এ ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন – ১৫ বার ওষুধ সেবন করা উচিত নয়, খুব বেশি হলে দশবার খাওয়া যেতে পারে। খুঁজে বের করা প্রয়োজন যে রোগী নিয়মিত কোনো ওষুধ সেবন করেন কিনা।

মাইগ্রেন অ্যাটাক
একপাশে ব্যথা এবং যা কয়েক ঘণ্টা তো থাকেই। আবার অনেক সময় আস্তে আস্তে বেড়ে তিনদিনও স্থায়ী। ডাক্তাররা বলেন, মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস অংশের মধ্যে নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাতই এর প্রধান কারণ। তবে এ সম্পর্কে এর চেয়ে বেশি গবেষণা এখনো করা হয়নি। এই ক্ষেত্রে ক্যালসিয়াম এবং মৃগী রোগের ওষুধ কিছুটা কাজে লাগতে পারে।

মন এবং ব্যথা
‘‘মাথাব্যথার সাথে মনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। যারা অতিরিক্ত নিয়মকানুনের মধ্যে চলে, তাদের ক্ষেত্রেও সাধারণ মাথাব্যথা হওয়া সম্ভাবনা রয়েছে।’’ একথা বলেন মিউনিখ ব্যথাকেন্দ্রের ডাক্তার প্রফেসর টোমাস ট্যোলে। ‘‘আমি এমনও দেখেছি যে একজন রোগী অন্যের মাথা ব্যথা হওয়ার কথা শুনে তারও মাথা ব্যথা শুরু হয়েছে।’’ তাঁর মতে, এ সব ক্ষেত্রে স্ট্রেচিং ব্যায়াম খুব কাজে লাগে।

স্ট্রেচিং ব্যায়াম
মিউনিখ ব্যথাকেন্দ্রের রোগী হ্যারমান ভগেনরাইটার বলেন, ‘‘এখানে শেখা স্ট্রেচিং ব্যায়াম সপ্তাহে কমপক্ষে তিন বার করার ফলে এখন আর মাথা ব্যথা নেই। তবে তা নিয়মিত করতে হবে। তা না হলে আবার ব্যথা শুরু হতে পারে।’’

পজিটিভ চিন্তা করুন
অযথা কোনো টেনশন বা চিন্তাভাবনা না করে পজিটিভ চিন্তা করা উচিত। এর ফলে মাথাব্যথা থেকে রেহাই পাওয়া যায়। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, ক্রনিক বা মাইগ্রেন মাথাব্যথা থেকে মুক্তি পেতে হলে, সময় মতো ঘুমাতে যাওয়া, খাওয়া এবং কিছুটা শারীরিক পরিশ্রম, ব্যায়াম বা মনের ভাব প্রকাশ করার মতো ভালো বন্ধু থাকা প্রয়োজন সকলেরই।

সূত্র : মাথাব্যথার কারণ ও লাঘবের উপায় [ডয়চে ভেলে, ২৮ মার্চ ২০১৪]

Similar Posts

error: Content is protected !!