আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ শুক্রবার (৩০ নভেম্বর ২০১৮) মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। তিনি যুদ্ধজয়ী বীর সেনা, তেল ব্যবসায়ী ও সফল কূটনীতিক ছিলেন। শীতল যুদ্ধের পরপরই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। তার ছেলে জুনিয়র বুশও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
প্রয়াত প্রেসিডেন্টের ছেলে জর্জ ডব্লিউ বুশ এই মৃত্যুর খবর ঘোষণা করার সময় তার বাবাকে “সর্বোত্তম চরিত্রের মানুষ এবং কোন ছেলে বা মেয়ের জন্য সেরা বাবা” হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের ৪১তম প্রেসিডেন্টকে যারা এই জীবন ও ভালবাসা দিয়েছেন, যারা আমার বাবার জন্য প্রার্থনা করেছেন ও শোক প্রকাশ করেছেন সেই সব বন্ধুবান্ধব ও নাগরিকের প্রতি পুরো বুশ পরিবার গভীর কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছে।” খবর এএফপি’র।
এপ্রিল মাসে তার স্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ফার্স্ট লেডি বারবারা বুশ মারা যান। তিনি তার স্ত্রীকে “বিশ্বে তার সবচেয়ে বেশি ভালবাসার নারী হিসেবে উল্লেখ করেন।” বারবারার মৃত্যুর পর তাদের ৭৩ বছরের দাম্পত্য জীবনের অবসান ঘটে। স্ত্রীর মৃত্যুর মাত্র কয়েক মাস পরেই মারা গেলেন বুশ।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট থাকাকালে ১৯৮৯ সালে রাশিয়ার সঙ্গে ঠাণ্ডা যুদ্ধের অবসানে তিনি ভূমিকা রেখেছিলেন। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের একক পরাশক্তি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের আত্মপ্রকাশ ঘটে। এর দুই বছর পর ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের বাহিনীকে পরাজিত করতে এক নজিরবিহীন জোট গড়তে সক্ষম হয়েছিলেন তিনি।
বৈমানিক ও সাবেক সিআইএ প্রধান মাত্র এক মেয়াদের জন্যই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯২ সালে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বিল ক্লিনটনের কাছে নির্বাচনে হেরে যান বুশ। দুর্বল অর্থনীতির কারণে তিনি হেরে যান।
জর্জ হার্বার্ট ওয়াকার বুশ ১৯২৪ সালের ১২ জুন ম্যাসাচুসেটসের মিল্টনে একটি ধনী রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম প্রেস্কট বুশ। তিনি একজন সফল ব্যাংকার এবং কনেকটিকাটের মার্কিন সিনেটর ছিলেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানী বিমান বিধ্বংসী রণতরী থেকে গুলি করে জর্জ বুশের বিমানকে প্রশান্ত মহাসাগরের ওপর ভূপাতিত করা হয়। অকুতোভয় বুশ প্যারাশ্যুটের সাহায্যে সাগরে নেমে যান এবং চার ঘণ্টা সাগরে শত্রুদের দৃষ্টি বাঁচিয়ে লুকিয়ে ছিলেন। পরে একটি ডুবোজাহাজ তাকে উদ্ধার করে।
যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরপরই ১৯৪৫ সালের জানুয়ারি মাসে বারবারা পিয়ার্সের সাথে বুশের বিয়ে হয়। এই দম্পতির ছয় সন্তানের মধ্যে রবিন নামের এক ছেলে শৈশবে মারা যান।
তিনি ইয়ালে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। তবে তিনি পৈত্রিক ব্যাংক ব্যবসায় যোগ না দিয়ে টেক্সাসে গিয়ে তেল ব্যবসা শুরু করেন। ১৯৬০ এর দশকে বুশ রাজনীতিতে যোগ দেন। তিনি রিপাবলিকান পার্টির চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৬৬ সালে তিনি মার্কিন হাউজ অব রিপ্রেজেন্টিটিভের একটি আসনে জয়লাভ করেন। তিনি ১৯৭০ সাল পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন।
পরবর্তী দশকে তিনি বেশ কয়েকটি উচ্চ পদে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি রিপাবলিকান ন্যাশনাল কমিটি, জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত, চীনের রাষ্ট্রদূত ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি রোনাল্ড রিগ্যানের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮০ সালে রিপাবলিকান প্রার্থী মনোনয়নে তিনি রিগ্যানের কাছে পরাজিত হন। বাসস