মৃত্যুর ছয় দিন পর আমজাদ হোসেনের লাশ কাল আসছে

আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।

ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালের সব ধরনের প্রশাসনিক কাজ তিন দিন আগে শেষ হলেও আমজাদ হোসেনের মরদেহ দেশে আনার ব্যাপারে আর্থিক জটিলতা তৈরি হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে পাওয়া ৪২ লাখ টাকার অনুদানের বাইরে বরেণ্য নির্মাতার চিকিৎসা বাবদ খরচ হয় আরও ৬১ লাখ টাকা। এবার এই অবশিষ্ট অর্থের জোগাড় হয়েছে। জানা গেছে, চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগরের উদ্যোগে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এই অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, বিল পরিশোধের পর আগামীকাল বৃহস্পতিবার রাতে অথবা পরশু শুক্রবার আমজাদ হোসেনের মরদেহ দেশে আনা হবে।

এদিকে আমজাদ হোসেনের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে গতকাল মঙ্গলবার (১৮ ডিসেম্বর ২০১৮) সন্ধ্যায় চ্যানেল আই কার্যালয়ে এক জরুরি বৈঠক আয়োজন করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম, নাট্যজন মামুনর রশীদ, পরিচালক এস এ হক অলীক, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার, সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম খোকন ও আমজাদ হোসেনের বড় ছেলে সাজ্জাদ হোসেন দোদুল।

আজ বুধবার সন্ধ্যায় ফরিদুর রেজা সাগর বলেন, “সবকিছু গুছিয়ে আনা হয়েছে। বাংলাদেশ বিমান কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছে, তারা আমজাদ হোসেনের মরদেহ বিনা খরচে দেশে নিয়ে আসবে।”

ঢাকার পর ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে টানা ১৬ দিন চিকিৎসার পর গত শুক্রবার বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ৫৭ মিনিটে মারা যান কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতা, গীতিকার, চিত্রনাট্যকার, অভিনয়শিল্পী ও লেখক আমজাদ হোসেন। পরদিন শনিবার সোহেল আরমান ব্যাংকক থেকে জানান, সাপ্তাহিক ছুটির কারণে প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ আছে। তাই প্রশাসনিক কার্যক্রম শেষ করে বাবার মরদেহ নিয়ে সোমবার সকালে ঢাকায় ফিরতে পারবেন। পরে কথা হলে তিনি জানালেন, অর্থের জোগাড় না হওয়ায় বাবাকে নিয়ে দেশে ফিরতে পারছেন না।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরেণ্য পরিচালক আমজাদ হোসেনকে ২৭ নভেম্বর রাতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সে সময় আমজাদ হোসেনের পরিবারের হাতে প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসার খরচ বাবদ ৪২ লাখ (এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া ২২ লাখ ও চিকিৎসায় ২০ লাখ) টাকা অনুদান দেন। সোহেল আরমানের তথ্যমতে, প্রধানমন্ত্রীর দেয়া অনুদানের বাইরেও ১৬ দিনে তাঁরা বাবার চিকিৎসা বাবদ খরচ হয়েছে বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৬১ লাখ টাকা।

মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হওয়ায় গত ১৮ নভেম্বর রাজধানীর তেজগাঁওয়ের ইমপালস হাসপাতালে ভর্তি করা হয় আমজাদ হোসেনকে। হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। শুরু থেকেই তাঁকে কৃত্রিম উপায়ে শ্বাসপ্রশ্বাস দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়। বাংলাদেশের বরেণ্য এই নির্মাতার শারীরিক অসুস্থতার খবর শুনে হাসপাতালে ভর্তির তিন দিনের মাথায় তাঁর চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়ার আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমজাদ হোসেনের উন্নত চিকিৎসার খরচ বাবদ ২০ লাখ টাকা এবং এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া বাবদ ২২ লাখ টাকা পরিবারের হাতে তুলে দেন তিনি।

সূত্র : প্রথম আলো, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮

Similar Posts

error: Content is protected !!