যশোদলে সৈয়দ নজরুল ইসলামের বাড়িতে হবে স্মৃতি পাঠাগার

আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।

আগামীকাল ৩ নভেম্বর। জেল হত্যা দিবস। প্রতি বছর এ দিনটি এলেই কিশোরগঞ্জবাসী শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে এ জেলার কৃতি সন্তান দেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামকে। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে নির্মমভাবে হত্যা করা জাতীয় এ নেতাকে। এ দিনটিতে নিরবে চোখের জল ফেলেন তার স্বজনেরা। মৃত্যুর আগে সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ জাতীয় চার নেতা হত্যার পূর্ণাঙ্গ বিচার দেখে যেতে চান শহীদের স্বজনেরা।

অপরদিকে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের শৈশবের স্মৃতি বিজরিত বীর দামপাড়া গ্রামে অবস্থিত সেই বসতঘরটি সংরক্ষণের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। একই সঙ্গে এখানে একটি স্মৃতি পাঠাগার গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর জন্য প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে।

কিশোরগঞ্জ জেলা সদরের যশোদল ইউনিয়নের বীর দামপাড়া গ্রামে জন্মেছিলেন দেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম। তার শৈশব কেটেছে নিভৃত এ গায়ে। যশোদল মিডল ইংলিশ স্কুলে পড়াশোনা শুরু। এরপর ভর্তি হন ময়মনসিংহ জিলা স্কুলে। ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতি মিশে যায় তার রক্তে।

জাতীয় নেতা হলেও এলাকার প্রতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছিল গভীর মমতা। সুযোগ পেলেই ছুটে আসতেন গ্রামের বাড়িতে। স্বাধীনতার পর সৈয়দ নজরুল ইসলাম শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেয়ার পর যশোদলে গড়ে তুলেন সুগার মিল, টেক্সটাইল মিলসসহ বিভিন্ন শিল্প কারখানা। কিন্তু তার মৃত্যুর পর নিভে যায় সকল সম্ভাবনার আলো। তাইতো এলাকাবাসীর হৃদয়ে স্থান করে নেয় সৈয়দ নজরুল ইসলাম।

ইতিহাসের নির্মম এ হত্যার সঙ্গে জড়িতদের পূর্ণাঙ্গ বিচার দেখে যেতে চেয়েছিলেন শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছোট ভাই সৈয়দ ওয়াহিদুল ইসলাম। কিন্তু সেই অপূর্ণতা নিয়েই গত বছর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

সৈয়দ নজরুল ইসলামের ভাতিজা সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম বলেন, আমার চাচাকে হত্যার পর আমাদের পরিবারে নির্মম নির্যাতন নেমে আসে। পুরো পরিবারকে হত্যার চেষ্টা করে স্থানীয় রাজাকাররা। পরিবার পরিজন নিয়ে দীর্ঘদিন পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে আমার বাবাকে। এখন আমরা অপেক্ষা করছি আমার চাচাসহ জাতীয় চার নেতা হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় বাস্তবায়ন দেখতে।

শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের নামে কিশোরগঞ্জে একটি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ভৈরব রেলওয়ে সেতু, কিশোরগঞ্জে নতুন স্টেডিয়ামসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা হয়েছে তার নামে। তবে কিশোরগঞ্জ শহরে তার স্মরণে নেই কোনো স্মৃতিস্তম্ভ। সেই সঙ্গে বীরদামপাড়ায় তার নিজের বাড়িটি সংরক্ষণ করে এখানে একটি পাঠাগার ও গবেষণাগার প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।

কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী জানান, সৈয়দ নজরুল ইসলামের বীর দামপাড়ার গ্রামের বাড়িটি সংরক্ষণের জন্য তার পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা হয়েছে। সৈয়দ নজরুল ইসলামের মেয়ে কিশোরগঞ্জ সদর আসনের এমপি সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপির পরামর্শে এরই মধ্যে মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাব পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।

সূত্র : জাগো নিউজ

Similar Posts

error: Content is protected !!