আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
ক্রমশ বাড়ছে মোবাইল ফোন বা কম্পিউটারের ব্যবহার। বিশেষ করে করোনা অতিমারির সময় থেকে এই ব্যবহার আরও বেড়ে গেছে। তার প্রভাব পড়ছে চোখে। চোখের গড়ন বদলে যাচ্ছে স্থায়ীভাবে। এমনই বলছে সাম্প্রতিক গবেষণা।
মোবাইল ফোনের ব্যবহারের সময় আমরা সেটিকে চোখের খুব কাছে ধরি। সেই যন্ত্রের আলোর সঙ্গে খাপ খাওয়াতেই চোখের গড়ন বদলে যাচ্ছে। বিজ্ঞান বইতে চোখের যে গোলাকার গড়নের ছবি দেখে আমরা অভ্যস্ত, তা বদলে এখন অনেকটা জলপাইয়ের আকার নিচ্ছে অক্ষিগোলক। চোখের সামনের দিকটা বাইরের দিকে বেরিয়ে আসছে এর ফলে। এমনই বলছেন ইংল্যান্ডের কয়েকজন চক্ষুবিদ।
তবে এর শেষ এখানেই নয়। এই হারে চোখের গড়নে বদল আসলে, তার প্রভাব পড়বে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উপরেও। এমনই আশঙ্কা বিজ্ঞানীদের।
কী বলা হয়েছে এই গবেষণাপত্রে? বলা হয়েছে, প্রতি দিন গড়ে ৬ ঘণ্টা ৫৫ মিনিট ফোনের দিকে তাকিয়ে থাকেন মানুষ। যতক্ষণ জেগে থাকেন, তার প্রায় ৪৬ শতাংশ সময়ই কাটে ফোন বা কম্পিউটার সামনে বসে। তার ফলেই চোখের গড়নে বদল আসছে। এর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ছে শিশুদের উপর। বড়দের চোখ আগের অবস্থায় ফিরে যেতেও পারে। কিন্তু শিশুদের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে তেমন কিছু হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ ১৬-১৭ বছর বয়সের আগে পর্যন্ত তাদের চোখের বিকাশ সম্পূর্ণ হয় না। এই সময়ে মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার তাদের চোখের গড়ন পাকাপাকি বদলে দেয়।
কেন এমন হয়? চিকিৎসকরা বলছেন, মোবাইল ফোনের দিকে তাকানোর সময় আমরা এমন ভাবে তাকাই, যাতে ফোকাসটি থাকে ফোনের পর্দার উপর। তার পিছনের সব কিছুকে আমরা যত ঝাপসা দেখব, ততই স্পষ্ট হবে ফোনের ছবি। দীর্ঘ দিন এটি চলতে থাকলে, চোখও চেষ্টা করে আলো যাওয়ার পথটিকে সরু করে দিতে। তাতেই বদলায় চোখের গড়ন। একে চিকিৎসার পরিভাষায় বলা হচ্ছে ‘শর্ট সাইটেড আই’।
কী করে এই সমস্যা কমাবেন? চিকিৎসকরা বলছেন, দিনের মাথায় অন্তত দু’ঘণ্টা বাড়ির বাইরে কাটান। রোদে ঘোরাঘুরি করতে পারেন। তাতে সমস্যা কমবে। আর ২০ মিনিট টানা কাজ করার পরে ২০ সেকেন্ডের জন্য এমন কোনও কিছুর দিকে তাকান, যা আপনার থেকে অন্তত ২০ ফুট দূরে রয়েছে।