বেসরকারি হাসপাতালে ডায়াগনস্টিক ফি নির্ধারণে কমিটি গঠনের নির্দেশ

আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম স্বাস্থ্য-সেবার মান উন্নয়নের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ডায়াগনস্টিক ফি নির্দরণের লক্ষ্যে সুপারিশসহ প্রতিবেদন তৈরির জন্য স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশনা দিয়েছেন।

কমিটির সদস্য সচিব হিসাবে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (হাসপাতাল) হাবিবুর রহমানকে মনোনীত করে কমিটিতে সদস্য হিসেবে বিএমএ, স্বাচিপ, বিএমডিসি এবং বাংলাদেশ বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতাল মালিক সমিতির একজন করে প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্তেরও পরামর্শ দেন মন্ত্রী। বাসস

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আগামী এক মাসের মধ্যে এসব বিষয়ে সুপারিশ প্রদানের জন্যে কমিটিকে নির্দেশ প্রদান করেন। পাশাপাশি মানহীন ও অবৈধ হাসপাতাল ও ক্লিনিক চিহ্নিত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে একটি মনিটরিং সেল গঠনেরও নির্দেশ দেন তিনি।

মোহাম্মদ নাসিম বুধবার ১২ এপ্রিল সচিবালয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে রাজধানীর বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় এ নির্দেশ দেন। হাসপাতালগুলোর সেবার মান পর্যালোচনায় এই সভার আয়োজন করা হয়।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সবার জন্য মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারের সহযোগি শক্তি হিসাবে বেসরকারি হাসপাতালগুলো কাজ করে। কিন্তু বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে বিভিন্ন রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষার মূল্য এবং সার্ভিস চার্জ অত্যধিক উচ্চ হারে থাকায় দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত জনগণের জন্য তা বহন করা দুঃসাধ্য।

তিনি বলেন, নামকরা ও বড়-বড় হাসপাতাল ও মধ্যম সারির হাসপাতালের মধ্যেই এ মূল্যের পার্থক্য অনেক। এক্ষেত্রে সব বেসরকারি হাসপাতাল সমন্বিতভাবে স্বেচ্ছায় উদ্যোগী হয়ে দেশের অধিকাংশ মানুষের কথা বিবেচনা করে সহনীয় মাত্রার মধ্যে ফি নির্ধারণ করলে জনগণ উপকৃত হবে।

স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ডা. এনামুর রহমান, স্বাস্থ্য সচিব মোঃ সিরাজুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, নার্সিং অধিদপ্তরের মহাপরিচালক তন্দ্রা শিকদার, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ এম. ইকবাল আর্সলান, বিএমএ’র মহাসচিব ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী, বিএমডিসির সভাপতি অধ্যাপক ডা. শহীদুল্লাহসহ রাজধানীর বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকগণ সভায় উপস্থিত ছিলেন।

কোনো হাসপাতাল থেকে কোনো রোগী যেন আর্থিক কারণে চিকিৎসা না পেয়ে ফেরত না যায় সেদিকে মানবিক দৃষ্টি রাখার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, হাসপাতালগুলোতে সরকার নির্ধারিত ১০ শতাংশ শয্যা দরিদ্র ও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বরাদ্দ রাখার বিধান ক্লিনিকগুলোকে মানতে হবে।

সভায় বিভিন্ন হাসপাতালের প্রতিনিধিগণ বিদ্যমান সেবার ধরনসহ সংশ্লিষ্ট নানাবিধ বিষয় ও সমস্যা নিয়ে মত বিনিময় করেন।

এর আগে বেসরকারি মেডিকেল কলেজের মানোন্নয়নে অপর এক মতবিনিময় সভায় মোহাম্মদ নাসিম বলেন, সরকারের কঠোর অবস্থানের কারণে সবাই বুঝে গেছে যেনতেন ভাবে মেডিকেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালানো যাবে না। পরিচালনা নীতিমালার শর্ত পূরণ না করায় বর্তমান শিক্ষাবর্ষে ৪টি কলেজের নতুন ছাত্র ভর্তি বন্ধ করা হয়েছে। কয়েকটি কলেজকে আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে। সরকারের এই সিদ্ধান্তগুলো সবার জন্য সতর্ক সংকেত। সকলেই বুঝে গেছে শিক্ষার মানের অবনতি হতে পারে এমন কোনো কাজকে সরকার প্রশ্রয় দিবে না।

সভায় চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. ইসমাইল খান, বিএসএমএমইউ’র উপাচার্য অধ্যাপকা ডা. কামরুল আহসান, বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা আলহাজ মকবুল হোসেন, বিএমএ’র সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনসহ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, বিসিপিএস ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ সভায় উপস্থিত ছিলেন।

Similar Posts

error: Content is protected !!