ভৈরবের মাদ্রাসাছাত্রকে গলাটিপে হত্যা করেছে ইমাম


আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।

বিকৃত যৌনাচার চরিতার্থ করতে না পেরে ১৩ বছরের মাদ্রাসাছাত্রকে গলাটিপে হত্যা করে বস্তাবন্দী লাশ নদীতে ফেলে দেয় আরেক মাদ্রাসার শিক্ষক ও ইমাম। শুধু তাই নয়, বিকৃত যৌনাচারের জন্য ওই ইমাম নিয়মিত ব্যয় করেন হাজার হাজার টাকা।

শিশু জোগাড় করে দিতে তার রয়েছে একাধিক সরবরাহকারী।

শনিবার ৩০ সেপ্টেম্বর ভৈরব থানা পুলিশের এক সংবাদ সম্মেলনে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য ওঠে আসে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কিশোরগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ রাকিব খাঁন, এএসপি সার্কেল কামরুল ইসলাম, ভৈরব থানার ওসি মুখলেছুর রহমান, ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, এসআই মো. মাজহারুল ইসলাম প্রমুখ।

নিহত ওই মাদ্রাসা ছাত্র জাসিমুর রহমান জাসিম কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌর শহরের কমলপুর জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র। আর খুনী খোরশেদ আলম ওরফে মুছা (৩৮) চট্টগ্রাম খুলশী থানার লালখান বাজারের আমীন সেন্টার এবাদত খানার ইমাম এবং চট্টগ্রামের লালখান এলাকার সাতকানিয়া কলোনী মাদ্রাসার শিক্ষক।

শনিবার ইমাম মুছা কিশোরগঞ্জের প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দীতে খুনসহ তার নানা অপকর্মের কথা স্বীকার করেছেন। তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মাদ্রাসা ছাত্র জাসিম গত ১৬ সেপ্টেম্বর ভৈরব থেকে নিখোঁজ হয়। এরপর ২১ সেপ্টেম্বর নিখোঁজ জসিমের বড় ভাই মো নাইমুল ইসলামের মোবাইল ফোনে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে কয়েকবার ফোন আসে।

ফোনের সূত্র ধরে ২৮ সেপ্টেম্বর বিকালে ঢাকার যাত্রাবাড়ীর তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসার নবম শ্রেণির ছাত্র মোতাছিম বিল্লাহ সাকিবকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার দেয়া তথ্য অনুসারে অভিযান চালিয়ে চট্টগ্রাম থেকে ইমাম মুছাকে গ্রেফতার করে।

পুলিশ জানায়, সাকিবের সাথে মুছার বিকৃত যৌন সম্পর্ক রয়েছে। তাছাড়া, মুছাকে নানা সময়ে সাকিব শিশু সরবরাহ করত। জাসিম ভৈরব থেকে রাগ করে ঘুরতে ঘুরতে চট্টগ্রামে চলে যায়। চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে সাকিবের সাথে জাসিমের পরিচয় হয়। পরে তারা মুছার বাসায় যায়।

এদিকে ২১ সেপ্টেম্বর ইমাম মুছা তার চট্টগ্রামের বাসায় ভৈরবের মাদ্রাসা ছাত্র জাসিমকে কয়েকবার বলৎকার করার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে বলৎকার করার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে তাকে গলাটিপে হত্যা করে মুছা। পরে ওইদিন বিকাল ৪টার দিকে জাসিমের লাশ বস্তাবন্দী করে ব্রিজ থেকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলি নদীতে ফেলে দেয়া হয়।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কিশোরগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ রাকিব খাঁন বলেন, ইমাম মুছা বিকৃত যৌনাচারের জন্যই মূলত ৩৮ বছর বয়সেও বিয়ে করেনি। বিকৃত মানসিকতা হওয়ার কারণ সে নিজেই বর্ণনা করেছেন।

সূত্র : ভৈরবে মাদ্রসাছাত্রকে গলাটিপে হত্যা করেছে ইমাম [কালের কণ্ঠ, ১ অক্টোবর ২০১৭]

Similar Posts

error: Content is protected !!