চাঁই তৈরি করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছে সিংপুরের কয়েকটি গ্রাম

আবদুল্লাহ আল মহসিন ।।

মাছ ধরার একটি মাধ্যমের নাম চাঁই। মূলত এটি এক ধরনের ফাঁদ, যা হাওর জলাশয়ের পানিতে ফেলে মাছ ধরা হয়। কিশোরগন্জ জেলার নিকলী উপজেলার হাওরে সিংপুর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম চাঁই তৈরি করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছে। ধনু নদীর কুল ঘেঁষে পাতারকান্দি, নাগরপুর গ্রামের প্রায় দুই হাজার নারী-পুরুষ চাঁই নির্মাণ করেন। কৃষিকাজ শেষে অবসর সময়ে চাঁই বানিয়ে বিক্রি করে অতিরিক্ত উপার্জন করছেন। বর্ষাকালে তাই গ্রাম ছেড়ে শহরে পাড়ি দিতে হয় না তাদের। বরং বাড়িতে বসেই টাকা উপার্জন আর সুন্দর সময় কাটে। চাঁই তৈরি করতে প্রথমে তাড়াইলের চৌগাঙ্গা বাজার থেকে বাঁশ সংগ্রহ করেন। এরপর বাঁশ কেটে ছোট ছোট শলা তৈরি করে। তারপার শলা দিয়ে শৈল্পিক গাঁথুনিতে তৈরি হয় ছোট-বড় চাঁই।

চাঁই তৈরিতে ব্যস্ত কারিগর
চাঁই তৈরিতে ব্যস্ত কারিগর

সরেজমিনে পাথারকান্দি, নাগরপুর গ্রাম ঘুরে দেখা যায় প্রত্যেক বাড়িতেই চলছে চাঁই তৈরির কাজ। এ সময় চাঁই কারিগর মুজিবুর রহমান আমাদের নিকলী’র প্রতিনিধিকে জানান, সারা বছরই আমাদের গ্রামে চাঁই তৈরি হয়। তবে অগ্রহায়ন থেকে চৈত্র মাস পর্যন্ত একটানা চাঁই তৈরি করে রাখি, বৈশাখ মাসে ফসলি জমি কাটার পর জৈষ্ঠ্য থেকে কার্তিক পর্যন্ত বিক্রি করি।

চাঁই তৈরিতে ব্যস্ত কারিগর
নৌকায় করে চাঁই নিয়ে যাচ্ছে হাওরে

মুহাম্মদ নামে আরেকজন কারিগর জানান, আমরা চাঁই তৈরি করে স্থানীয় সিংপুর বাজার, চামটা বন্দর, মিঠামইন, ইটনা, অষ্টগ্রাম বাজারসহ হাওরের বিভিন্ন গ্রামে পাইকারি ও খুচরা মূল্যে বিক্রি করি। উল্লেখ্য, এক সময় হাওরে এই গ্রামের লোকেরা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে চাঁই কিনে নিজেরা মাছ ধরতো, পরবর্তীতে কয়েকজন চাঁই তৈরি করা শুরু করছে। এভাবেই সিংপুর গ্রামে চাঁই তৈরির সূচনা হয়।

নৌকায় করে হাওরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে চাঁই

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!