হাটহাজারীতে কবর দিয়ে যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করার অভিযোগ!

হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি ।।

হাটহাজারীতে শহীদ কাজী আহমেদ নেওয়াজ শ্যামলের নামানুসারে করা একটি রাস্তা কবর দিয়ে যাতায়াতের পথ বন্ধ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার পূর্ব ধলই গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। তবে শহীদ কাজী আহমেদ নেওয়াজ শ্যামলের ভাতিজার দাবি ওই কবরস্থানের পাশে কোনো রাস্তাই ছিলো না।

জানা যায়, উপজেলার পূর্ব ধলই গ্রামের শহীদ কাজী শ্যামলের নামে করা রাস্তাটিতে স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তি কবর দিয়ে ধীরে ধীরে যাতায়াতের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই পুকুরটির পাড় দিয়ে তৈরি করা রাস্তার পূর্ব পাশে কবরস্থান আর পুকুরের পশ্চিম পাড়ে মসজিদ ও কবরস্থান বিদ্যমান। উক্ত কবরস্থানে পর্যাপ্ত পরিমাণে জায়গা থাকার পরও শুধুমাত্র চলাচলের পথ বন্ধ করে দিতেই রাস্তার উপর কবর দেয়া হচ্ছে।

আর সড়কের একপাশে পানি চলাচলের রাস্তার উপর কনক্রিট ও সিমেন্টের তৈরি স্ল্যাব দিয়ে তৈরি করা হয়েছে একটি কালভার্ট। যেটি বর্তমানে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে।

এ রাস্তা দিয়ে চলাচলকারীরা জানান, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম রাস্তাটির উন্নয়ন করে শহিদ কাজী শ্যামলের নামে নামকর করার জন্য ৫ লাখ টাকা বরাদ্দও দেন। এদিকে কয়েকজন ব্যক্তি রাস্তার উপর কবর দিয়ে রাস্তাটি বন্ধ করার পাঁয়তারা করে যাচ্ছে।

এদিকে রাস্তাটির উপর কবর তৈরি করায় সাধারণ পথচারীসহ স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের রাস্তাটি ব্যবহারে মারাত্মক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তারা বলেন, বর্তমানে তো আর কবর সরানো যাবে না, তবে কবরের পশ্চিম পাশের গাছগুলো কেটে চলাচল উপযোগী রাস্তা করে দিতে প্রশাসনকে অনুরোধ করেন তারা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শহীদ কাজী শ্যামলের আপন ভাতিজা কাজী হায়দার এবং কাজী আরাফাত বলেন, আমাদের মৌরশী সম্পত্তি আমরা মসজিদ কর্তৃপক্ষ কে দান করেছি কবরস্থানের জন্য। আমরা কবর দিচ্ছি, যাতায়াতের কোনো রাস্তা বন্ধ করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়নি। তাছাড়া এখানে কোনো রাস্তাও নাই। আমাদের অজান্তে কে বা কারা এ কবরস্থানের উপর দিয়ে রাস্তা করার জন্য জেলা পরিষদ থেকে বরাদ্দ এনেছেন শুনেই আমরা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে তা বাতিলের জন্য লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। যদি তা বাতিল করা না হয় তবে এ ব্যাপারে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

স্থানীয় ইউপি সদস্য তহিদুল আনোয়ার হাটহাজারী অনলাইন প্রেসক্লাবকে জানান, একটি পক্ষ জেলা পরিষদ থেকে রাস্তা করার জন্য বরাদ্দ এনেছেন কিন্তু শহিদ কাজী আহমেদ নেওয়াজ শ্যামলের পরিবার তা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে বরাদ্দটি বাতিল করেছে বলে আমি শুনেছি।

চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম বলেন, ওখানে দুইটি পক্ষ হওয়াতে জেলা পরিষদের সদস্য শওকতুল আলমকে বিষয়টি তদন্ত করার জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্ত করে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা পরিষদের সদস্য মো.শওকতুল আলম অনলাইন প্রেসক্লাব কে জানান, জামাত শিবিরের হাতে নির্মমভাব নিহত হওয়া শহীদ কাজী আহমেদ নেওয়াজ শ্যামলের স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য তার নামে সড়কটির নামকরণ করার জন্য আমিও স্থানীয়রা অনেক দৌড়া দৌড়ি করার পর জেলা পরিষদ থেকে ৫ লক্ষ টাকার বরাদ্দ আনে। কিন্তু শহিদ শ্যামলের পরিবারের পক্ষ থেকে রাস্তাটি করতে আপত্তি জানান। পরে কোন পক্ষই আমার সাথে আর যোগাযোগ করেনি। তবে তারা রাস্তা করতে না দিলে রাস্তার জন্য জেলা পরিষদ থেকে বরাদ্ধ দেয়া টাকা জেলা পরিষদে ফেরত পাঠানো হবে।

Similar Posts

error: Content is protected !!