জনদুর্ভোগের নাম মহাস্থান মহাসড়ক! যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ নেই

মহাস্থান (বগুড়া) প্রতিনিধি ।।

জনদুর্ভোগ আর দুর্দশার নাম মহাস্থান মহাসড়ক। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যাত্রীদের ভোগান্তির যেনো শেষ নেই। রাজধানী ঢাকার সাথে সার্বক্ষণিক একমাত্র যোগাযোগ প্রবেশদ্বার বগুড়ার মহাস্থানগড় মহাসড়ক। আর এই সড়কে বৃষ্টির কারণ সহ অধিক মালামাল বোঝাই যানবাহন চলাচল করায় সড়কটির ধারণক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। সড়কটির বেশ কিছু অংশে খানাখন্দে পরিণত হয়। অনেক সময় সড়ক বিভাগের লোকজনদের সড়কের ভাঙা অংশে নামে মাত্র কার্পেটিং করতে দেখা যায়। দু’দিন পর সেটি আবারও আগের অবস্থা দেখা যায়। যেখানে মহাসড়কে পিচ খোয়া ব্যবহার করা হতো। সেখানে সাম্প্রতিক মহাস্থানের এই সড়কটি সংস্কার করতে ইট, বালি দিয়ে সোলিং করা হচ্ছে।

মহাসড়কে যানবাহন চলাচলে এটি কতটা ঝুঁকি মুক্ত হবে এমন মিশ্রপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে সচেতন মানুষের মাঝে। ইট, বালি সোলিং করে কাজের গুণগত মান কেমন হবে সেটা দেখা যাবে পরে। ঈদের পূর্বমুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক কাজে ধীরগতির কারণে উত্তর বঙ্গে ঢুকা এবং বের হওয়া মানুষগুলোকে পড়তে হয়েছে অসহনীয় যানজটের কবলে।

এদিকে বৃষ্টি মৌসুমে নির্মাণ কাজ চালু থাকায় জনভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে এলাকার বাসিন্দা, এই রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী যাত্রীদের ভোগান্তির যেন শেষ নেই। এর মধ্যে রাস্তার দু’পাশে অপরিকল্পিত খোঁড়াখুঁড়ির কারণে মরণ খাদ তৈরী হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাস্তার পাশে নিম্ন আয়ের ব্যবসায়ীরা। খননকৃত মাটিদ্বারা আশপাশের এলাকা কাদায় সয়লাব হয়ে গেছে। প্রায় রাস্তাগুলো চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

নির্মাণ শুরুর আগে সাইড লাইন না রাখায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা লেগে থাকছে অসহনীয় যানজট। যানজটের কারণে মহাসড়কের এই রাস্তাটুকু পার হতে এক থেকে দেড় ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লাগে। সবচেয়ে বেশি যানজট মহাস্থান বাসস্ট্যান্ড থেকে হাতীবান্ধা করতোয়া ব্রিজ এলাকা পর্যন্ত। যানজটের কারণে রাতে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা উত্তরবঙ্গের দূরপাল্লার বাস নির্ধারিত সময়ে গন্তেব্যে পৌঁছাতে অতিরিক্ত সময় বেশি লাগছে।

বুধবার সকাল ১০টায় দেখা যায়, মহাসড়কের দুই পাশেই কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানবাহনের দীর্ঘ সারি। আধা ঘণ্টা ধরে একই জায়গায় আটকে আছে কোনো কোনো গাড়ি। কোনো গাড়ি কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর সামনে কয়েক হাত গিয়ে আবার আটকে থাকছে আধা ঘণ্টা।

যাত্রীরা জানান, কখনো কখনো কচ্ছপ গতিতে ৫ মিনিট করে চলার পর আধঘণ্টারও বেশি সময় নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। এ অবস্থায় প্রচণ্ড গরমে অস্থীরতা বোধ করতে হচ্ছে।

কথা হয় হানিফ পরিবহনের চালকের সাথে। তিনি বলেন, ঢাকাতে যানজট থাকলেও এমন বিড়ম্বনায় পড়তে হয় না। ৫ মিনিটের রাস্তা যেতে ৩০ মিনিট থেকে ঘণ্টা সময় লাগছে।

অসময়ে রাস্তার কাজ শুরু করার জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগকে অভিযুক্ত করে চালকেরা বলেন, এমনিতে ঢাকা-রংপুর এ মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেশি থাকে। তার ওপর সময় না বুঝে রাস্তার সংস্কার কাজ শুরু করে দিনভর মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টি করেছে।

গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশ বলেন, মহাস্থান এলাকায় মহাসড়কে রাস্তার সংস্কার কাজের কারণে একটি লেন বন্ধ রয়েছে। এ কারণেই যানজট সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ যানজট নিরসনে কাজ করছে। অল্প সময়ের মধ্যে রাস্তার কাজ শেষ হয়ে এ মহাসড়ক স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলেও জানান তিনি।

Similar Posts

error: Content is protected !!