ছাতিরচরে ভোট চাইতে খলায় খলায় ঘুরছেন প্রার্থীরা

আবদুল্লাহ আল মহসিন ।।
ধান আর ভোট মিলেমিশে একাকার। দুটোই নিকলীবাসীর অতি গুরুত্বপূর্ণ ও উৎসবমুখর অনুষ্ঠান। অসময়ের অতিবৃষ্টিতে একদিকে ধানকাটার তাড়া; একই সময়ে উপজেলাজুড়ে চলছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তোড়জোড়। আর মাত্র ক’দিনের মাঝেই নিকলীর ৭টি ইউনিয়নবাসী বেছে নিবেন তাদের পছন্দের প্রতিনিধিদের। আমাদের নিকলী ডটকম-এর নির্বাচনী পর্যালোচনামূলক প্রতিবেদনে আজ থাকছে ছাতিরচর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন।

ছাতিরচরে খলায় গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রার্থীরা। বাড়িঘর তালাবদ্ধ করে হাওরে ধান কাটতে চলে যান ভোটারেরা। তাই দিনের বেলায় কাউকে বাড়িতে না পেয়ে ছুটছেন খলায়। এতে ভোটারেরা অসন্তুষ্ট হয়নি বরং খুশিই হচ্ছেন। এমনটিই জানালেন ছাতিরচরের সাধারণ লোকজন।

ঘোড়াউত্রা নদীর তীরে একেবারে প্রত্যন্ত হাওর গ্রাম ছাতিরচর। নিকলী উপজেলার নবগঠিত ইউনিয়ন এটি। এটিকে বলা যায় এক গ্রাম এক ইউনিয়ন। ফসল কাটার পূর্ণ সময় হলেও নির্বাচনের কাজ থেকে পিছিয়ে নেই তারা। বিশেষ করে রাতের বেলায় নির্বাচনকেন্দ্রিক আনন্দ-উৎসবটা থাকে বেশি।

এবারে এই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দলীয়ভাবে আওয়ামীলীগ থেকে নৌকা প্রতীকে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন বদরুল আমিন চৌধুরী মানিক। তিনি এই ইউনিয়নের প্রথম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। সেই সাথে  বর্তমানে তিনি ছাতিরচর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদেও আসীন আছেন। তিনি বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে রয়েছে তার ঘনিষ্ট যোগাযোগ। বিজয়ী হওয়ার আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজ করছি। জনগণের রায়ে এবারও নির্বাচিত হওয়ার আশা করছি।

অপরদিকে বিএনপি থেকে ধানের শীষ প্রতিকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ইন্জিনিয়ার পরশ মাহমুদ। তিনি ২০১১ সালের নির্বাচনে ২য় অবস্থানে ছিলেন। এলাকায় রয়েছে দলীয় কর্মী-সমর্থক আর নির্বাচনের দক্ষতা। জানা যায়, এবারের নির্বাচনে তিনি ছাতিরচর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। পর্যবেক্ষক মহলের মতে, গতবারের চেয়ে এবার তিনি সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন। মাহমুদ আলী নামে একজন স্থানীয় ভোটার জানান, লড়াইটা নৌকা বনাম ধানের শীষের মাঝেই হবে।

এছাড়া স্বতন্ত্র আছেন জামাল উদ্দীন নামে একজন ব্যবসায়ী। তিনি ঢাকার নারায়ণগন্জে ১৫ বছর যাবত ব্যবসা করছেন। জহিরুল নামে একজন বলেন, এলাকায় নতুন মুখ হলেও নির্বাচনের মাঠে তিনিও চমক দেখাতে পারেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘোড়া প্রতিকে আছেন রবিউল। তিনিও প্রাণপন চেষ্টা করছেন। আত্মীয়-সমর্থকদের নিয়ে ভোটারের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তিনিও। দেখা যাক কি হয়। আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন তায়েব উদ্দীন। তিনি বিএনপি নেতা ও সাবেক ইউ পি মেম্বার। চশমা প্রতীকে প্রথমে প্রচারণায় মাঠে থাকলেও বর্তমানে প্রচারণায় কম দেখা যাচ্ছে। এলাকায় গুন্জন শোনা যাচ্ছে তিনি বসে গেছেন। আগামী ২৩ এপ্রিল শনিবার পর্যন্ত অপেক্ষায় আছে ছাতিরচরবাসী। সে দিনই আসলে দেখা যাবে কে সেই ভাগ্যবান, যিনি এই “দ্বীপ ইউনিয়নের” আগামী ৫ বছরের জন্য নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে বিজয়ীর মুকুট পরবেন।

 

পড়ুন গুরুই ইউনিয়ন নির্বাচন পর্যালোচনা : গুরুই ইউনিয়নে নৌকা আর ধানের শীষের লড়াই

পড়ুন কারপাশা ইউনিয়ন নির্বাচন পর্যালোচনা : কারপাশা ইউনিয়নে দলীয় প্রভাব সৃষ্টি করতে পারছে না

পড়ুন সিংপুর ইউনিয়ন নির্বাচন পর্যালোচনা : ত্রিমুখী লড়াই সিংপুর ইউনিয়নে

পড়ুন জারুইতলা ইউনিয়ন নির্বাচন পর্যালোচনা : জারুইতলায় বিদ্রোহীরা দলীয়দের বেকায়দায় ফেলতে পারেন

Similar Posts

error: Content is protected !!