ভাসছে হাওর, ভাসছে মানবতা

রাখী গোপাল দেবনাথ, বুসান, দক্ষিণ কোরিয়া।।

নদীমাতৃক বাংলাদেশের জনগণের প্রধান জীবিকা হলো কৃষিকাজ। দেশের প্রবৃদ্ধি ৬.৫ অর্জনে প্রধান ভূমিকা পালন করে কৃষক। কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোণা ও সুনামগঞ্জ জেলায় কৃষকের ফসল পাহাড়ী ঢলের পানিতে সব ভাসিয়ে নিয়ে গেছে।

এলাকার জনগণ সবাই একফসলি ফসল উৎপাদন করে। কারণ এখানে বছরের ছয় মাসই পানি থাকে। আর তাই একটি ফসলই তাদের সবকিছু। তাই সবার মাথায় হাত। মহাজনরা বাড়ির আঙ্গিনায় দাঁড়িয়ে আছে। ফসল তো নাই। উল্টো মহাজন ও ব্যাংকের চক্রবৃদ্ধি সুদ। মানবতা আজ ভূলুণ্ঠিত। নদীর জলে ভাসছে মানবতা।

কৃষকের সাহায্যর জন্য দুর্যোগপূর্ণ জরুরি এলাকা ঘোষণা করার জন্য সবাই ব্যস্ত। কিন্তু এর মধ্যে অনেকদিন চলে গেল। যেই লাউ, সেই কদু। কৃষককে পুঁজি করে কিছু আমলা নৌ ভ্রমণ করবে, ভ্রমণ ভাতা উত্তোলন করবে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতার পর যেটুকু আসবে তাও অনেকের নাগালের বাইরে থাকবে।

আমি বলছি না যে সবটাই দুর্নীতি হবে। তবে মুখ চিনে মুগের ডাল না হলেই ভাল হয়। কারণ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, “সাত কোটি জনগণ, সাত কোটি কম্বল। আমার কম্বল কই?” আমার দেশের কৃষক দুর্নীতি করে না। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের পুনর্বাসনে কেন বিলম্ব! কৃষকের ট্যাক্সে তো বাংলাদেশের উন্নয়ন হচ্ছে। কিন্তু কৃষকের উন্নয়ন কই?

কিশোরগঞ্জের নিকলীর আবহাওয়া অধিদপ্তরের শাখা হয়েছে। কার্যক্রম নাই। কার্যক্রম থাকলে হয়ত কৃষক সুফল পেত। সবই প্রশ্ন??? আমাদের সব আছে কিন্তু সঠিক বাস্তবায়ন নেই। স্বাধীনতা পেয়েছি কিন্তু স্বাধীনতার সুফল পায়নি কৃষক। বিজয়ের পতাকা উড়ছে কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতা খামচে ধরেছে পতাকা। পর্যবেক্ষণ না করে কৃষকদের পুনর্বাসন করুন। না হলে মধ্যম আয়ের দেশে হলেও কৃষিপণ্য আমদানি বাবদ কোটি কোটি টাকা বিদেশে চলে যাবে।

Similar Posts

error: Content is protected !!