মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত জালালপুর স্কুল


আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।

বিদ্যালয়টির দুইতলা ভবনের ৩ দিকের কার্নিশ ঘিরে ছোট-বড় ২১টি মৌচাক। অগণিত মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত নিকলী উপজেলার জালালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি; যেন মৌ খামারও।

সরজমিন বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, উঠানের রেইনট্রি ছায়ায় খেলছে শিশু শিক্ষার্থীরা। তাদের ফাঁকফোকর দিয়ে ভোঁ ভোঁ শব্দে উড়ে যাচ্ছে মৌমাছির দল। প্রচণ্ড গতিতে যেতে গিয়ে কারও গায়ে ধাক্কা লেগে মাটিতে উল্টে পড়ছে কোনো কোনোটি। শিক্ষার্থীদের কারও গায়ে চড়ে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে।

শিশু শিক্ষার্থীরা সে সব ঝেড়ে ফেলছে, মাড়িয়ে যাচ্ছে ভ্রুক্ষেপহীন। তিন চার শিক্ষার্থীকে দেখা গেল আহত মৌমাছিদের বাঁচাবার খেলায় মগ্ন। মাটি থেকে কাঠি দিয়ে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছে আহতদের।

দলছুট এক শিশুকে দেখা গেল হাতে বসা এক মৌমাছির সাথে গল্পে মশগুল। মৌমাছিগুলো কামড়াচ্ছে না কাউকেই।

শিক্ষকদের বসবার ঘরে বসে চা পান পর্বে প্রধান শিক্ষক কবিরুল হক দেখালেন ঘরটির দেয়ালসহ আসবাবপত্রের ওপর শতাধিক মৌমাছির উড়া বসা। জানালেন, শ্রেণিকক্ষগুলোতেও একই অবস্থা। এ এলাকার শিশুদের কাছে স্বাভাবিক ব্যাপার। এখন আমাদেরও সয়ে গেছে। মাছিগুলো সচরাচর কামড়ায় না; তাই কোন ব্যবস্থাও নেয়া হয় না। তিনি বিদ্যালয় ভবনটি ঘুরিয়ে দেখালেন। পূর্ব-পশ্চিম লম্বা দক্ষিণমুখী দুইতলা বিদ্যালয় ভবনের সামনের দিকের কার্নিশে ৯টি, পশ্চিমের কার্নিশে ৬টি, উত্তরের কার্নিশে ৪টি এবং ভবনের সামনের রেইন ট্রি গাছে ২টিসহ মোট ২১টি মৌচাক।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, বিদ্যালয়টির পূর্ব দিকে নদী। চারদিকের বিস্তীর্ণ জমিতে এ সময় সরিষার ক্ষেতে ফুল আসে। মৌ সংগ্রহ ও চাক বাঁধার নিরাপদ পরিবেশই বিদ্যালয়টিতে অধিক মৌচাকের কারণ।

স্থানীয় মধু সংগ্রহকারী হামু মিয়া জানান, মৌচাকগুলো থেকে প্রতি বছর ১৫০ থেকে ২০০ লিটার মধু সংগ্রহ করা যেত। স্থানীয় প্রভাবশালী মহল রাতের আঁধারে কোনো রকম ভেঙে নিয়ে যায়। প্রধান শিক্ষক কবিরুল হক তিনি এ বিদ্যালয়ে নতুন এবং মধু সংগ্রহ বিষয়ক কিছু জানেন না বলে এ প্রতিনিধিকে জানান।

সূত্র : স্কুলটি যেন মৌ খামার!  [মানবজমিন, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭]

Similar Posts

error: Content is protected !!