মস্তিষ্ক সজাগ রাখার কিছু সহজ উপায় জেনে নিন

আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।

ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনার চাপ থাকা স্বাভাবিক। তবে নানা কারণে পড়াশোনায় মনোযোগ ধরে রাখা অনেকের জন্যই বেশ কঠিন হয়। মস্তিষ্ককে সজাগ রাখার কিছু সহজ উপায় থাকছে ছবিঘরে।

মনোযোগ বাড়াতে চান?
‘‘যখন নিজেকে ক্লান্ত মনে হবে বা যথেষ্ট মনোযোগ নেই পড়াশোনায়, তখন কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পড়লে তা মনে রাখা সহজ হয়।’’ টেক্সাসের একটি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ৩০০ ছাত্র-ছাত্রীকে নিয়ে করা এক সমীক্ষার ফলাফল থেকে এই তথ্য জানা গেছে। যারা দাঁড়িয়ে পড়াশোনা করেছিলো, তাদের মনোযোগ ছিলো অনেক বেশি– যারা বসে পড়াশোনা করেছিলো তাদের তুলনায়। তাছাড়া বন্ধুদের সাথে পড়াশোনা বা আলোচনা করলেও বেশি মনে থাকে অনেকের।

দায়িত্ববোধ
ছোটবেলা থেকেই যারা অস্থির প্রকৃতির হয়, পড়াশোনা বা অন্য কিছুতেও তেমন আগ্রহ নেই বা মন বসাতে পারেনা – তাদের ক্ষেত্রে অবশ্যই কিছুটা ভিন্ন ব্যবস্থা নিতে হবে। অর্থাৎ শিশু বা ছাত্র-ছাত্রীকে কোনো পোষা প্রাণী কিনে দেয়া যেতে পারে। ছোট ভাই-বোনের খানিকটা দেখাশোনার দায়িত্ব দেয়া যেতে পারে, যাতে করে ওরা কাজের প্রতি দায়িত্বশীল হয়ে উঠতে পারে, আত্মবিশ্বাস বাড়তে পারে। কারণ আত্মবিশ্বাসই পড়াশোনায় মনোযোগ এনে দেবে।

ছাত্র-ছাত্রীদের চাই ভিটামিন ফুড
পড়ুয়াদের যে যথেষ্ট ভিটামিন দরকার সে কথা আর কে না জানে? তবে শুধু জানা নয়, তা কার্যে পরিণত করতে হবে। তাই ছাত্র-ছাত্রীদের চাই যথেষ্ট ভিটামিন, মিনারেল এবং পানীয়– অর্থাৎ স্বাস্থ্যসম্মত খাবার। প্রধান খাবারের ফাঁকে ফাঁকে আপেল খাওয়া যেতে পারে, যাতে মিনারেল, আয়রন এবং প্রচুর ভিটামিন রয়েছে। জার্মানরা প্রচুর আপেল খায়, মনোযোগ ঠিক রাখতে জার্মানির কোন কোনো স্কুলের টিফিনে আপেল খেতে দেয়া হয়।

ব্রেনের খাবার
বিভিন্ন বাদাম– বিশেষ করে আখরোট, সামুদ্রিক মাছ, শাক-সবজি, ফল, গ্রিন-টিসহ বিভিন্ন চা। যা শরীর এবং মস্তিষ্কের জন্য খুবই উপকারী। পড়াশোনার মাঝে পাকা টমেটো বা টমেটোর জুসও খাওয়া যেতে পারে। কারণ মাত্র ১০০ গ্রাম টমেটোতে আছে ২৫ গ্রাম ভিটামিন ‘সি’ এবং পটাশিয়াম। কাজেই পান করতে পারেন ছাত্র-ছাত্রীরা টমেটোর জুস বা অন্য কোন ফল বা সবজির রসও।

ফাস্টফুড!
ফাস্টফুডে ব্যবহার করা হয় নানা রকম রাসায়নিক উপাদান, যা অনেকের ক্ষেত্রেই অ্যালার্জির কারণ হয়ে থাকে এবং যা মনোযোগ এবং শরীরে তার প্রভাব ফেলে। জার্মানির খাদ্য বিশেষজ্ঞ ডা. ইয়ুর্গেন শ্লুইটারের মতে, ‘‘দুর্ভাগ্য হলেও সত্যি যে ভুক্তভোগী অনেকেই সেকথা জানতে বা বুঝতে পারে না।’’ আজকের তরুণদের প্রিয় খাবার ফাস্টফুড এবং মিষ্টি পানীয় হলেও শরীর ও মস্তিষ্কের কথা মনে রেখে সে সব থেকে কিছুটা সাবধান হওয়া উচিত।

ব্রেনের বিশ্রাম
আজকাল দেখা যায় অনেকে পড়ার ফাঁকে একটু বিশ্রামের জন্য ফেসবুকে ঢোকেন বা গেম খেলেন, যাতে আসলে মোটেই বিশ্রাম হয় না। তার চেয়ে বরং কর্মক্ষমতা বাড়ায় সেরকম ছোট এক টুকরো ডার্ক চকলেট মুখে দিয়ে পছন্দের গান শুনতে পারেন। অথবা বন্ধুদের সাথে কিছুক্ষণ কথা বলতে পারেন। সোজা কথা মনোযোগটাকে কিছুক্ষণের জন্য অন্য দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া। এতে করে মাথাটা খালি তো হবেই এবং পড়াশোনায়ও মনোযোগ ফিরে আসবে।

খেলাধুলা বা ব্যায়াম
গবেষকরা মনে করেন, শারীরিক পরিশ্রম অর্থাৎ খেলাধুলা বা ব্যায়াম যে কোনো মানুষকে যে কোনো চাপ থেকে সহজে মুক্তি দিতে সাহায্য করে। ব্যায়াম বা খেলাধুলা করার ফলে শরীরে হরমোনের প্রকাশ ঘটে কিছুটা অন্যভাবে। আর স্বাভাবিকভাবেই তার প্রভাব পড়ে মনোযোগেও।

সূত্র : পড়াশোনায় মনোযোগ বাড়ানোর কিছু উপায়  [ডয়চে ভেলে, ৯ জুলাই ২০১৭]

Similar Posts

error: Content is protected !!