ভেষজের দুনিয়াতে থানকুনির স্থান রয়েছে অনেক ওপরে। কারণ এর রয়েছে নানান গুণ। থানকুনি বর্ষজীবি উদ্ভিদ। কোনো প্রকার যত্ন ছাড়াই জন্মে। মাটির ওপর লতার মতো বেয়ে ওঠে। পাতা গোলাকার ও খাঁজকাটা। সাধারণত স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশেই থানকুনি গাছ বেশি জন্মে। তাই পুকুরপাড় বা জলাশয়ের পাশে থানকুনির দেখা মেলে বেশি।
থানকুনির ইংরেজি নাম Indian Pennywort। এর বৈজ্ঞানিক নাম Centella asiatica Urban। সংস্কৃতে থানকুনি ‘ব্রাহ্মী’ নামে পরিচিত। তবে আয়ুর্বেদে একে বলা হয় ত্বাষ্ট্র। অঞ্চলভেদে থানকুনি টেয়া, মানকি ইত্যাদি নামে পরিচিত।
থানকুনি পাতা শাক হিসেবে রান্না করে খাওয়া হয়, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে। ভর্তা করে বা কাঁচা পাতা সালাদ হিসেবেও খাওয়া যায়। থানকুনিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ। এছাড়াও থানকুনির রয়েছে নানা ভেষজ গুণ –
* থানকুনি পাতা সকল ধরনের পেটের রোগের মহৌষধ। পাতা বেটে ভর্তা করে বা ঝোল করে খেলে বদহজম, ডায়রিয়া, আমাশয় ও পেটব্যথা সেরে যায়।
* আলসার এগজিমা, হাঁপানি, চুলকানি ও অন্যান্য চর্মরোগ সারাতে থানকুনি অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
* থানকুনি পাতার সক্রিয় উপাদান Bacoside A ও B। Bacoside B মতিস্তষ্কের কোষের জন্য খুব উপকারী। থানকুনি পাতা নিয়মিত খেলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।
* থানকুনি কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে। সংবহনতন্ত্রের স্থায়ীভাবে স্ফীত ও বর্ধিত শিরা কমাতে সহায়তা করে।
* থানকুনি পাতা চামড়া মসৃণ করে এবং ক্ষতিগ্রস্ত কোষকে পুনর্গঠনে সাহায্য করে।
* পুরনো ক্ষতে থানকুনি পাতা সিদ্ধ করে তার পানি প্রয়োগ করলে সহজে নিরাময় হবে। নতুন ক্ষতে থানকুনি পাতা বেটে লাগালে উপকার পাওয়া যায়।
* অপুষ্টির কারণে মাথা থেকে চুল পড়ে গেলে থানকুনি পাতার রস খেলে চুলপড়া কমে যাবে।
* থানকুনি দেহের লাবণ্য ও কান্তি ধরে রাখতে সাহায্য করে। এক গ্লাস দুধের সাথে ৫/৬ চা চামচ থানকুনির রস মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
* দাঁতের রোগেও থানকুনি সমান উপকারী। থানকুতি পাতা সেদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে কুলি করলে দাঁতের ব্যথা ও মাড়ি থেকে রক্তপাড়া কমা যায়।
হাজারো গুণের সমাবেশ ঘটেছে থানকুনি পাতায়। থানকুনি পাতার ব্যবহার শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। সেই সাথে পরিবেশও স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করি। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় থানকুনি পাতা রাখার চেষ্টা করুন।
সূত্র : ইন্টারনেট