আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
‘সারাবছর আমরার চলাচল করার লাইগ্যা একটা সেতু বানাইছে, কিন্তু বিরিজে উডনের লাইগ্যা রাস্তা নাই। তাইলে এই সেতু দিয়া আমরার কোন কাজে লাগব’। দুই গ্রামের মধ্যে চলাচলের জন্য তৈরি সংযোগ সড়কহীন সেতুটি দেখিয়ে এভাবেই নিজের আক্ষেপ আর ক্ষোভের কথা বলছিলেন নিকলী উপজেলার সিংপুর ইউনিয়নের ভাটিবরাটিয়া কামারপাড়ার বাসিন্দা মানিক মিয়া। শুধু মানিক মিয়া নন, একই আক্ষেপ ভাটিবরাটিয়া কামারপাড়া ও পাশের দক্ষিণপাড়ার দুই গ্রামের সব বাসিন্দার।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ভাটিবরাটিয়া কামারপাড়া ও দক্ষিণপাড়া দুই গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার বাসিন্দা। এদের চলাচলের জন্য দুই গ্রামের মধ্যে ওই সেতু নির্মাণ করা হয়। কিন্তু সেতু নির্মাণ হলেও এর দুই পাশে তৈরি করা হয়নি সংযোগ সড়ক। ফলে সেতু থাকলেও তা আদতে কোনো কাজেই আসছে না এলাকাবাসীর।
ওই দুই গ্রামের বাসিন্দা আলাল মিয়া, হাছেন আলী, আবু তাহেররা জানান, এভাবে বেআব্রু অবস্থায় সেতুটি নির্মাণ করে রাখা হলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় তাদের দুর্ভোগ বেড়েছে। কারণ সংযোগ সড়ক না থাকায় বর্ষাকালে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে চলাচল করতে তারা নিজেদের উদ্যোগে একটি বাঁশের সাঁকো তৈরি করে নেন। আর শুকনো মৌসুমে চলাচলের জন্য সেতুর নিচে মাটি ফেলে পায়ে হাঁটা পথ বানিয়ে নেন তারা। এই সংযোগ সেতু করার ফলে মৌসুমী ব্যবস্থাপনাগুলো চলমান রাখা সম্ভব হচ্ছে না।
নিকলী প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় সূত্র জানায়, ত্রাণ, দুর্যোগ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ২৮ লাখ ৬৭ হাজার ১৬৫ টাকা ব্যয়ে ২০১৪ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে সেতুর কাজ শেষ হয়। কিন্তু এরপর আর সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়নি। সেতুটি নির্মাণ করে গাজীপুরের মেসার্স বাচ্চু এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
নিকলী প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আবুল কামাল আজাদ সংযোগ সড়ক না থাকায় দুই গ্রামের মানুষের চলাচলে দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে জানান, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের জামানতের তিন লাখ টাকা আমাদের কার্যালয়ে জমা রয়েছে। সংযোগ সড়ক না করা হলে জামানতের টাকা ফেরত দেয়া হবে না।
এ বিষয়ে নিকলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাহবুব আলম বলেন, সেতুর সাথে মাটি দিয়ে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে দিতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে বলা হয়েছে।
সূত্র : বাংলানিউজ