অপেশাদার নভোচারীদের মহাকাশ পর্যটন শুরু বুধবার

আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।

সব প্রস্তুতি শেষ। এখন শুরু ওড়ার পালা। আগামী বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১) যুক্তরাষ্ট্রের কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে প্রথম চার অপেশাদার নভোচারী নিয়ে পৃথিবীর কক্ষপথে উড়াল দেবে স্পেসএক্স-এর ড্রাগন রকেট। যার মাধ্যমে শুরু হচ্ছে মহাকাশ পর্যটনের যুগ। এখন থেকে যে কেউ মন চাইলেই ছুটতে পারবে মহাশূন্য পানে। তবে তাকে অবশ্যই মোটা অঙ্কের টাকা গুনতে হবে। চলতি বছর ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি মহাকাশ ভ্রমণ প্রত্যক্ষ করেছে বিশ্ববাসী। জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে মহাকাশ ভ্রমণে যান মার্কিন ধনকুবের ও মহাকাশ প্রযুক্তি কোম্পানি ভার্জিন গ্যালাক্টিকের প্রতিষ্ঠাতা রিচার্ড ব্রানসন।

দুই সপ্তাহ পরই নিজস্ব রকেট “ব্লু অরিজিন”-এ করে ঘুরতে যান আরেক ধনকুবের ও ই-কমার্স জায়ান্ট আমাজনের জেফ বেজোস। তাদের উভয়ের সঙ্গেই ছিলেন একাধিক পেশাদার নভোচারী। তবে বিলিয়নিয়ার ইলন মাস্কের স্পেসএক্সের এই “ইনস্পিরেশন৪” মিশনে থাকছে না কোনো পেশাদার নভোচারী। চারজনের সবাই সাধারণ ও শিক্ষানবিশ। আর এজন্যই এই মিশনের আরেক নাম “অল সিভিলিয়ান ক্রু”।

পুরো প্রকল্পের নেপথ্যে রয়েছেন জারড আইজ্যাকম্যান নামের আরেক বিলিয়নিয়ার। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান “শিফট-৪ পেমেন্টস”র প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী তিনি। মাত্র ১৬ বছর বয়সে ঘরে বসেই কোম্পানিটি দাঁড় করিয়েছিলেন তিনি। বিমান চালানোয় বেশ আগ্রহ রয়েছে ৩৮ বছর বয়সি এই যুবকের। হালকা একটি বিমানে করে বিশ্ব ভ্রমণ করে ইতোমধ্যে রেকর্ড গড়েছেন তিনি। এছাড়া সামরিক বিমান উড়ানোতেও হাত পাকিয়েছেন। মার্কিন বিমানবাহিনীর পাইলটদের প্রশিক্ষণের জন্য “ড্রাকেন ইন্টারন্যাশনাল” নামে একটি কোম্পানিও রয়েছে তার। স্পেসএক্স-এর তিনদিনের এই মিশনে আরও তিনজনের সঙ্গে তিনিও থাকছেন। চলতি বছরের মার্চ মাসেই ঘোষণা দিয়ে বিষয়টি জানান। আইজ্যাকম্যান বলেন, “এই মিশনটি সম্পূর্ণ হওয়ার পরে লোকজন দেখবে এবং বলবে- এই প্রথমবারের মতো সাধারণ মানুষ মহাশূন্যে যেতে পারছে।”

রিচার্ড ব্রানসনের ভার্জিন গ্যালাক্টিক ও জেফ বেজোসের ব্লু অরিজিনের কয়েক মিনিটের ওজনশূন্য ভ্রমণের চেয়ে আরও বেশি উচ্চাভিলাসী আইজ্যাকম্যানের এই মিশনটি। কারণ স্পেসএক্সের ক্রিউ ড্রাগন ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনের কক্ষপথকে ছাড়িয়ে আরও দূরে যাবে। এই ভ্রমণের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে তিন দিন। সেক্ষেত্রে এর ঝুঁকিও বেশি। যেমনটা বলছিলেন অ্যাইজ্যাকম্যান। তার কথায়, “ঝুঁকি মোটেও জিরো নয়। আপনি একটা রকেটে চড়ে যাচ্ছেন যার গতি ঘণ্টায় ১৭ হাজার ৫০০ মাইল। এমন পরিবেশে ঝুঁকি তো অবশ্যই আছে।”

“ইনস্পিরেশন৪” মিশনটি প্রাথমিকভাবে দাতব্য উদ্যোগ হিসাবে শুরু হয়। শীর্ষস্থানীয় পেডিয়াট্রিক ক্যান্সার গবেষণাকেন্দ্র “সেন্ট জুড চিলড্রেন”স রিসার্চ হসপিটালের জন্য তহবিল সংগ্রহ এবং এ সম্পর্কে সচেতনতা ও সমর্থন তৈরির জন্য উদ্যোগ নেন আইজ্যাকম্যান। ব্যক্তিগতভাবে এই প্রতিষ্ঠানের জন্য ১০ কোটি ডলার তহবিল তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। “মিশন কমান্ডার”র দায়িত্ব নিয়েই আইজ্যাকম্যান ফেব্রুয়ারিতে সেন্ট জুড হাসপাতালের সহকারী হেইলি আর্সেনৌকে প্রথম ক্রুমেট হিসাবে মনোনীত করেন। হাড়ের ক্যান্সার থেকে বেঁচে যাওয়া আর্সেনৌ টেনেসির এই হাসপাতালেই এক সময় চিকিৎসা নিয়েছেন। সিয়াটল-অ্যারোস্পোস ইন্ডাস্ট্রির কর্মী এবং মার্কিন বিমানবাহিনীর সাবেক সদস্য ক্রিস সেমব্রস্কি একটি লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত হন। ৭২ হাজার অংশগ্রহণকারীর ওই লটারি থেকে ওঠে ১১ কোটি ৩০ লাখ ডলার।

 

 

সূত্র : এএফপি

Similar Posts

error: Content is protected !!