আবদুল্লাহ আল মহসিন ।।
সারি সারি নৌকা সাজানো নদীর দু’কূল। চলছে ছোট বড় নৌকার নির্মাণ ও সংস্কার। নদীর তীর মুখরিত কাঠমিস্ত্রীর হাতুরী-করাতের শব্দে। এমন দৃশ্যের দেখা পাওয়া যায় কিশোরগঞ্জের হাওরবেষ্টিত উপজেলা নিকলীর বিভিন্ন নদী তীরবর্তী স্থানে।
সরেজমিনে উপজেলার সোয়াইজনী, নরসুন্দা, ধনু, ঘোরাউত্রা, রোদা নদীর তীর ঘুরে দেখা গেছে কাঠমিস্ত্রীরা ছোট-বড় নৌকা নির্মাণ ও সংস্কার করছে।
নৌকার প্রচলন অনেক পুরনো ও প্রাচীন। এখানে রপ্তানী নৌকা (পাটবোঝাই নৌকা এখন বিলুপ্ত), পানসী নৌকা (ছইয়া অলা বিশেষ আকৃতির ছোট নৌকা এটাও বিলুপ্ত) দৌড়ের নৌকা (শুধুমাত্র নৌকাবাইচে ব্যবহৃত) ডিঙ্গি নৌকা, কুর্শা নৌকার প্রচলন রয়েছে। বর্ষায় নৌকার ব্যবহার হয় উপজেলার সবখানেই। এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়া, ব্যবসা ও মাছ ধরার অন্যতম বাহন হল নৌকা। তাছাড়া হাওরের একফসলী বোড়ো ফসল ওঠানো হয় বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ মাসে। এ সময় হাওর থেকে ধান, বাদাম ও অন্যান্য ফসল আনার একমাত্র মাধ্যম হলো নৌকা। এ জন্য নৌকা নির্মাণ ও সংস্কারের কাজটুকু চৈত্র মাসে করা হয়। এখানকার নৌকাগুলি দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় সিজনওয়ারী ভাড়ায় বিক্রি করা হয়। বিশেষ করে মজলিশপুর ও দামপাড়ার নৌকার মহাজনরা নৌকা ব্যবসায় লক্ষ/কোটি টাকা বিনিয়োগ করে থাকেন।
বদরপুরের মহাজন ডাঃ কুতুব উদ্দীন জানান, আমার নৌকা নেত্রকোনা, মোহনগঞ্জ, মদন, আটপাড়া, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর, সাল্লা, দিরাই, জামালগঞ্জসহ বিভিন্ন জায়গায় ভাড়ায়ও বিক্রি হয়। তিনি আরো জানান, উর্ধ্বতন কর্তৃপ এখানকার নৌকার মহাজনদের সুযোগ সুবিধা দিলে নৌকা নির্মাণ শিল্পের আরো বিকাশ করা সম্ভব।