আরডিসির জরিপ : মহাজোট ২৪৮, ঐক্যফ্রন্ট ৪৯

আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট ২৪৮ আসন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ৪৯ আসন ও অন্যান্য দল পেতে পারে তিনটি আসন। বেসরকারি সংস্থা রিসার্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের (আরডিসি) এক জরিপে উঠে এসেছে এমন ফলাফল।

জরিপে দেশের ভোটারদের ৬০ শতাংশ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে। আর বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টকে ভোট দিয়েছে ২২ শতাংশ ভোটার। ১০ শতাংশ মানুষ কাকে ভোট দেবেন, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানাতে পারেননি। জাতীয় পার্টির পক্ষে ভোট পড়েছে ৪ শতাংশ। আর ৩ শতাংশ ভোটার ভোট দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

তবে জরিপে অংশ নেয়া ৯৮ শতাংশ ভোটার বলেছেন, তারা একাদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে ভোট দিতে চান। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের ভোটারদের মতামত নেয়ার উদ্দেশ্যে সংস্থাটি গত ৯-১৬ ডিসেম্বর জরিপের মাধ্যমে ছায়াভোট গ্রহণ করে।

জরিপে অংশ নেন মোট দুই হাজার ২৪৯ জন ভোটার। দেশের ৫১টি নির্বাচনী এলাকাতে এই ভোট-জরিপ পরিচালনা করা হয়। বুধবার (২৬ ডিসেম্বর ২০১৮) রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জরিপের ফলাফল তুলে ধরা হয়।

জরিপে আরডিসির অর্থনীতিবিদ ফরেস্ট ই কুকসন এ ফলাফল তুলে ধরেন। জরিপে ভোট দিতে নারীদের জন্য ছিল লাল ব্যালট পেপার এবং পুরুষদের জন্য ছিল নীল ব্যালট পেপার।

২০১১ সালের আদমশুমারির তথ্যগুলোকে নমুনা হিসেবে নিয়ে দ্বৈবচয়নের ভিত্তিতে দেশের জেলা-উপজেলাগুলো থেকে ভোটারদের এই জরিপ করা হয়। প্রশ্ন ছিল, “আজ যদি নির্বাচন হয়, তবে কার জন্য ভোট দেবেন?”

জরিপের সময় ভোট দেয়ার পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলো সম্পর্কে মতামত দিয়েছেন ভোটাররা। ফলাফলে আওয়ামী লীগকে ভালো বলেছে, ৬৪ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ এবং খারাপ বলেছে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ। বিএনপিকে ভালো বলেছে ২৭ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ এবং খারাপ বলেছে ১৮ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ। জাতীয় পার্টিকে ভালো বলেছে ১৪ দশমিক ৯ শতাংশ এবং খারাপ বলেছে ১৫ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ।

ফলাফল তুলে ধরে আরডিসির অর্থনীতিবিদ ফরেস্ট ই কুকসন বলেন, গ্রামীণ নারী থেকে সেনাবাহিনীর সদস্য সব শ্রেণি, পেশা ও বয়সের মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। নমুনার সংখ্যা একটু ছোট। কত জেলা বা উপজেলায় এই জরিপ করা হয়েছে, তা আমি এখন বলতে পারছি না। তবে দেশের প্রত্যেক অঞ্চলের ভোটারদের থেকে মতামত নেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ হয়ে নির্বাচনের সম্ভাব্য ফলাফল জানতে এই জরিপ করা হয়। গণতান্ত্রিক দেশগুলোতে নির্বাচনের আগে এই ধরনের ভোট নেয়ার রেওয়াজ আছে।

জাতীয় নির্বাচনের ভোটারদের সংখ্যার তুলনায় এই জরিপের নমুনার সংখ্যা কম বলে মনে করেন কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে ফরেস্ট ই কুকসন বলেন, জরিপটির নমুনা ছোট। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এমন ধরনের জরিপ নেয়া হয় যেখানে নমুনার সংখ্যা থাকে কেবল এক হাজার। ছোট নমুনা হলে সহজে সেটা ব্যবস্থা করে একটা উত্তর পাওয়া যায়।

ভোটারদের মতামত সম্পর্কে এ অর্থনীতিবিদ বলেন, “আমার মনে হয়, নির্বাচনে সহিংসতা বা দ্বন্দ্ব যা-ই হোক না কেন, সেটা হয়তো ভোটারদের ওপর প্রভাব ফেলবে। কিন্তু ভোটারদের পছন্দ একই থাকবে।” সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে কুকসেন বলেন, আমরা নিরপেক্ষভাবেই এ জরিপ পরিচালনা করেছি। জরিপের জন্য ভোটারদের কাছে ব্যালট পেপার দিয়েছি। সেই ব্যালটে তারা ভোট দিয়েছেন। ব্যালটে ভোট দিতে অস্বীকার করা ও বা ভোট দেয়ার ইচ্ছা নেই, এমন প্রশ্নও যুক্ত করা হয়েছিল।

জরিপে আরও বলা হয়েছে, ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেখানে মহাজোট ভোট পেয়েছিল ৫৭ শতাংশ। বিএনপি জোট পেয়েছিল ৩৭ শতাংশ ও অন্যরা পেয়েছিল ৬ শতাংশ ভোট। এবারের জরিপের ফল অনেকটা তারই ধারাবাহিকতা।

সূত্র : যুগান্তর, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৮

Similar Posts

error: Content is protected !!